বিআইডব্লিউটির ধারাবাহিক উচ্ছেদ অভিযানের দ্বিতীয় দিনে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। গজারিয়ার ফুলদি নদীর তীরে এ অভিযানের দুই দিনে কাঁচা পাকা প্রায় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাছলিমা আক্তার এর নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪ পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের রসূলপুর খেয়াঘাট এলাকায় অবৈধ অবকাঠামো উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে বিআইডব্লিউটিএ।
এ উচ্ছেদ অভিযানে সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ খান তোতার বাড়ির সীমানা প্রাচীরের কিছু অংশ নদীর সীমানা পরার ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইমামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজ্জুজামান খান জিতুর মালিকানাধীন দোতলা একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ সময় বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাছলিমা আক্তার জানান, গজারিয়া উপজেলার মেঘনা নদী তীরবর্তী এলাকা ফুলদি নদীর মোহনায় রসুলপুর খেয়াঘাটের আশেপাশে অবৈধভাবে দখল করে নদীর তীরে স্থাপনা উদ্ধার করতে অভিযান পরিচালনা করেছি। মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনায় সারাদেশে বিআইডব্লিউটিএ অধীনে নদীর তীরবর্তী এলাকা রক্ষায় প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। টানা দুইদিনে প্রায় শতাধিক স্থাপনা ভেঙে নদীর জমি উদ্ধার করেছি। তবে অবৈধ দখলদার যে যত ক্ষমতাসীন হোক না কেনো, কাউকে কোন ছাড় দেয়া হবেনা। এখানে যারাই দখলদার থাকুক না কেন কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
রসুলপুর খেয়াঘাটের পাশে আওয়ামী লীগের অস্থায়ী পার্টি অফিসটিও বিআইডব্লিউটিএর তালিকায় নদীর আওতায় পরে, বিআইডব্লিউটিএর কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অপসারণের জন্য তিন দিনের সময় চেয়ে নেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহ।
এসময় তিনি বলেন, আমরাও চাই সরকারের কাজে সহায়তা করতে,তাই অতি দ্রুত আমাদের গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী পার্টি অফিসটি নির্দিষ্ট স্থানে সরিয়ে নেয়া হবে।
বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক শরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনায় অভিযান পরিচালনা করছি, বুধবার এবং বৃহস্পতিবার টানা দুইদিনের অভিযানে প্রায় শতাধিক কাঁচা পাকা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা উচ্ছেদ করে জমি উদ্ধার করেছি। দুই দিনে আন-লোড করা একটি ড্রেজার ভেঙে ঘুরিয়ে ফুলদী নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে।তাছাড়া নদীর প্রবাহ গতিরোধ করে নদীতে মাছ শিকারের ঝোপ তৈরি করায় একাধিক ঝোপের বাঁশ ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। অবৈধ দখলদার ঠেকাতে কর্মসূচি হাতে নিয়েছি,আমাদের কর্মসূচি অনুযায়ী এ কাজ অব্যাহত থাকবে।
তবে এখানে অবৈধভাবে নদীর জায়গা দখল করা ব্যবসায়ীরা বলছেন তাদের পূর্ব নোটিশ ছাড়াই এখানে অভিযান পরিচালনা করেছেন তারা। ব্যবসায়ীরা লক্ষ লক্ষ টাকা এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিনিয়োগ করায় তাদের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে।
বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ বলছে গত তিন দিন আগেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাসলিমা আক্তারের উক্ত এলাকাগুলোতে মাইকিং করে চর সাহেবানী, মাথাভাঙ্গা, রসুলপুর এবং ইমামপুর মৌজায় নদীর জায়গা দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে এমন স্থাপনা অপসারণে অভিযান পরিচালনা করবে বিআইডব্লিউটিএ। মালামাল রক্ষা করতে চাইলে অভিযান পরিচালনা করার আগে নিজ উদ্যোগে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে দখলদারদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন