ট্রেনযাত্রীদের অভিযোগ, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যাত্রীর নাম নিবন্ধনের মাধ্যমে টিকিট কাটার নিয়ম চালু করেছে। কিন্তু ট্রেনের ভেতর এনআইডির সঙ্গে টিকিট মিলিয়ে দেখা হয় না। ফলে কালোবাজারিরা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে টিকিট কালোবাজারি করছে। তারা স্টেশন কাউন্টার ও শহরের দোকান থেকে অনলাইনে আগাম টিকিট কেটে নেয়। এতে করে বেশির ভাগ প্রকৃত যাত্রীদের পক্ষে টিকিট সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। ফলে বাধ্য হয়ে কালোবাজারে চড়া দামে টিকিট কিনতে হয় ভুক্তভোগী যাত্রীদের।
রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর থেকে দিনে ও রাতে ঢাকাগামী নীলসাগর ও চিলাহাটি আন্তঃনগর এক্সপ্রেস নামের দুটি ট্রেন চলাচল করে। সৈয়দপুরের জন্য আসন বরাদ্দ রয়েছে নীলসাগর এক্সপ্রেসে শোভনচেয়ার কোচ ৫৮, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেয়ার কোচ ১০ ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বার্থ (শয়নকক্ষে) দুটি এবং চিলাহাটি এক্সপ্রেসে শোভনচেয়ার ৩৬টি, এসি চেয়ারে ৩০টি ও স্লিপারে ৮টি; যা যাত্রীদের চাহিদার তুলনায় আসনসংখ্যা অপ্রতুল। আর এই আসন সংকটের সুযোগ গ্রহণ করছে কালোবাজারিরা। তারা আগেভাগেই অধিকাংশ টিকিট কেটে নেয়। ফলে প্রকৃত যাত্রীদের ভাগ্যে টিকিট জোটে না। টিকিট না পেয়ে কালোবাজারে টিকিট কিনতে হয় যাত্রীদের।
সরেজমিনে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে দেখা যায়, স্টেশন কাউন্টারে ট্রেনের টিকিটের জন্য ভিড় করছেন যাত্রীরা। কিন্তু টিকিট না মেলায় খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে তাদের। প্ল্যাটফর্মে জাভেদ হোসেন নামের এক যাত্রী বলেন, আমি ঢাকায় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করি। ঢাকায় যেতে হবে বলে অনলাইন ও কাউন্টারে টিকিট না পেয়ে ব্ল্যাকারের কাছ থেকে ৪৫০ টাকার শোভন টিকিট ১ হাজার টাকায় কিনতে হয়েছে।
কালোবাজারি ব্যবসায় জড়িত একটি সূত্র জানায়, আসনের তুলনায় ঢাকাগামী ট্রেনের টিকিটের চাহিদা বেশি। এসব টিকিট আমরা অগ্রিম কেটে চড়া দামে বিক্রি করি। রেলওয়ের নতুন পদ্ধতিতে সরাসরি টিকিট কাটতে পারি না। আলাদা আলাদা পরিচয়পত্র দিয়ে টিকিট কাটতে হয়। এ জন্য রিকশাচালক, হোটেল শ্রমিক ও হকারসহ শহরের অভাবী মানুষের এনআইডি দিয়ে টিকিট কাটা হয়। যার আইডি দিয়ে টিকিট কাটা হয় তাকে টিকিট প্রতি ১০০ টাকা দিতে হয়।
সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার ওবাইদুল ইসলাম রতন জানান, রেলওয়ে স্টেশন কাউন্টারে টিকিটের কোনো কালোবাজারি নেই। তবে শহরের দোকান থেকে অনলাইনে টিকিট কিনে বিক্রি করেন কেউ কেউ। এতে রেলওয়ে স্টেশন কর্মীদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
মন্তব্য করুন