গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে এক বন্দির মৃত্যুর ঘটনায় সিনিয়র জেল সুপারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এর প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বন্দির মৃত্যুসংক্রান্ত কাগজপত্র পর্যালোচনা করে রোববার (৩ মার্চ) চট্টগ্রাম সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক জেবুন্নেছা বেগম তদন্তপূর্বক আগামী ২৭ মার্চের মধ্যে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
বিষয়টি বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট অজয় ধর ও অ্যাডভোকেট মিঠুন বিশ্বাস কালবেলাকে নিশ্চিত করে বলেন, বোয়ালখালী থানার ওসি, সিনিয়র জেল সুপারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গত ২০ ফেব্রুয়ারি আদালতে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩ এর ১৫ (২) ধারায় মামলার আবেদন করা হয়। পরে ২৭ ফেব্রুয়ারি আদালত বাদির জবানবন্দি রেকর্ড করে মামলাটি আমলে নিয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য রোববার (৩ মার্চ) শুনানির দিন ধার্য করেন। শুনানি শেষে আগামী ২৭ মার্চের মধ্যে প্রাথমিক তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন জমা দিতে পুলিশ সুপার পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোকে নির্দেশ দেন আদালত।
আদালত সূত্র জানায়, গত ২৭ জানুয়ারি বিকেলে নিজ বাড়ি থেকে রুবেল দেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার বিরুদ্ধে মদ উদ্ধারের মামলা দেওয়া হয়। পরদিন রুবেলকে আদালতে হাজির করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিলে অসুস্থ অবস্থায় প্রিজনভ্যানে করে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২ ফেব্রুয়ারি রুবেলের সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা কারাগারে দেখা করতে যান। সেখানে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় হুইলচেয়ারে করে নিয়ে আসা হয়। এ সময় তার ডান চোখের ভ্রুর ওপর কাটা জখম দেখা যায়। ৫ ফেব্রুয়ারি কারাগারে রুবেলের মৃত্যুর খবর জানানো হয় তার স্ত্রীকে। ২০ ফেব্রুয়ারি নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু আইনে আদালতে মামলা করেন তার স্ত্রী পূরবী পালিত। মামলায় বোয়ালখালী থানার ওসি মো. আছহাব উদ্দিন, পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম, এসআই এসএম আবু মুছা, এএসআই মাঈনুদ্দিন, এএসআই সাইফুল ইসলাম, কনস্টেবল কামাল ও আসাদুল্লাহ, এসআই রিযাউল জব্বার, থানার ডিউটি অফিসার, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মঞ্জুর হোসেন, জেলার এমরান হোসেন মিয়া, ডেপুটি জেলার নওশাদ মিয়া, আখেরুল ইসলাম, সুমাইয়া খাতুন ও ইব্রাহীম এবং ওয়ার্ড মাস্টারকে আসামি করা হয়।
রুবেলের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর-খরনদ্বীপ ইউনিয়নের দক্ষিণ জ্যৈষ্ঠপুরা গ্রামে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন স্ত্রী পূরবী পালিত।
মন্তব্য করুন