কুমিল্লা থেকে চুরি হওয়া সেই নবজাতককে সাত মাস পর উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বুর্যো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কুমিল্লার সদস্যদের অভিযানে সোমবার (৪ মার্চ) রাজধানী থেকে ওই নবজাতক উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ওই নবজাতকদের বাসার ভাড়াটিয়াসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন, মুরাদনগর উপজেলার নিয়ামতপুর এলাকার জাকির হোসেনের স্ত্রী পারভীন (৩০) ও জেসমিন জেলার বরুড়া উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের আব্দুল মালেকের মেয়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ১৩ এপ্রিল কুমিল্লা জেনারেল (সদর) হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারের সামনে থেকে চার দিনের ওই নবজাতক চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনায় নবজাতকের বাবা মো. জসিম উদ্দীন (৪৫) কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পিবিআই মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায়।
গ্রেপ্তার আসামিদের বরাতে পিআইবি জানায়, পারভীনের সঙ্গে জেসমিন কথোপকথনে জানায়, তার একটি নবজাতক ছেলে থাকলে কতইনা ভালো হতো। এ সময় পারভীনও তার কথা বুঝতে পেরে তাকে বলে যদি ৫০ হাজার টাকা দেয় সে একটি নবজাতক এনে দিতে পারবে। পরে তারা পরিকল্পনা করে নবজাতককে এখানে এনে দিলে জেসমিন তাকে নিয়ে পালাবে। নবজাতকের নানু নুরজাহান বেগম (৬০) তাকে নিয়ে বারান্দায় হাঁটাহাঁটি করার সময় তাদের বাসার ভাড়াটিয়া পারভীন নবজাতকের শারীরিক সমস্যার কথা বলে বড় ডাক্তার দেখানোর জন্য বলে। নবজাতকের মাকে কিছু না জানিয়ে পারভীম তার নবজাতকসহ নানুকে নিয়ে টিকিট কাউন্টারে যায়।
জেসমিন নুরজাহান বেগমকে বলেন, তিনি বৃদ্ধ মহিলা এবং তার কষ্ট হচ্ছে আমার কোলে দেন। বাচ্চা সঙ্গে থাকলে তাড়াতাড়ি টিকিট দেবে। তখন নুরজাহান বেগম সরল বিশ্বাসে নবজাতককে ওই মহিলার কাছে তুলে দিয়ে একপাশে দাঁড়ায়। এই সুযোগে জেসমিন নবজাতককে চুরি করে পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে পারভীনকে টিকিট কাউন্টারের কাছে পেয়ে ওই মহিলার কথা জিজ্ঞাসা করলে সে তাকে দেখেনি বলে জানায়। চারদিকে খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে পুলিশকে জানান। এ ঘটনার ৭ মাস পর পিবিআই তাকে উদ্ধার করে।
পিবিআই কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার, মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘ওই নবজাতককে বাচ্চাসহ ঢাকা মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে আসামিসহ গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জেসমিনকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের সে স্বীকার করে তার সহযোগী পারভীনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে (৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করে) ছেলে বাচ্চা মনে করে ক্রয় করে। পারভীন নবজাতকের মায়ের অজান্তে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে নবজাতকের নানীসহ জরুরি বিভাগে নিয়ায়ে আসে। পরে কৌশলে জেসমিনের কাছে নবজাতককে বুঝিয়ে দিয়ে টাকা আদায় করে। এ বিষয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা শেষে আদালতে প্রেরণ প্রক্রিয়াধীন।’
মন্তব্য করুন