খদ্দরকে কিনতে হতো টোকেন। এই টোকনের গায়ে লেখা থাকতো টাকার অংক। সেই অনুযায়ী খদ্দর পেত দেহ ব্যবসায় নিয়োজিত পতিতা। প্রায় এক থেকে দেড় শ বিঘা জায়গার ওপর বিশাল পুকুর, আম বাগান, কনক্রিটের তৈরি হরেক রকমের জীবজন্তুর মূর্তি আর বাগানের মধ্যে সারি সারি পাকা ঘর। তার মধ্যে চলতো রমরমা দেহ ব্যবসা। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে বিনোদন পার্কের আড়ালে এসব করা হচ্ছিল। অবশেষে পার্কটি সিলগালা করে দিলো প্রসাশন।
রোববার (১০ মার্চ) বিকেল ৫টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান এ অভিযান পরিচালনা করেন। উপজেলার কালুপাড়া এলাকায় অবস্থিত পার্কটি সিলগালাসহ আটক করা হয় দুজন পুরুষ খদ্দর ও এক নারী পতিতাকে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের দুই মাসের কারাদণ্ড দেন। পার্কে থাকা অন্যান্য পতিতা ও খদ্দর প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, বিনোদন পার্কের নাম করে এখানে পতিতাদের দিয়ে দেহব্যবসা করা হতো। গত দুই বছরে ১৫ থেকে ২০ বার অভিযান চালিয়ে পার্কের মালিক ও ম্যানেজারসহ শতাধিক খদ্দের এবং পতিতাকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। কোনো ক্রমেই পার্কটিতে দেহব্যবসা বন্ধ করা যাচ্ছিল না। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবারও পার্কের মালিক মোজাম্মেল হক দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পতিতা এনে দেহব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। অবশেষে রোববার (১০ মার্চ) বিকেলে জেলা প্রশাসক ও জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহমেদের নির্দেশে এই পার্ককে অবৈধ ঘোষণা করে সিলগালা করা হয়। এ সময় দুই খদ্দর প্রশান্ত কুমার (৩০) ও বিলাশ চন্দ্র সরকার (৩০) এবং ফাতেমা বেগম (৩২) নামের এক পতিতাকে দুই মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন থেকে পার্কটি বন্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ দিয়ে আসছিলেন। আমরা বেশ কয়েকবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে জেল-জরিমানাও করেছি। তারপরেও পার্কের মালিক এসব অনৈতিক কার্যকলাপ পরিচালনা চালিয়ে আসছিলেন। পার্কটি সিলগালার কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।
মন্তব্য করুন