দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে কয়লা বোঝাই জাহাজ নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুর কবলে পড়ে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। জিম্মি করা হয় ২৩ নাবিককে। এরমধ্যে আছেন নেত্রকোনার রোকন উদ্দিন। তিনি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
জলদস্যুদের কাছে আটকে পড়ার পর খবর ছড়িয়ে পড়ার থেকেই রোকন উদ্দিনের বাড়িতে আহাজারি করছেন অসহায় মা। পরিবার, আত্মীয়স্বজন,ও অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর দাবি সুস্থ অবস্থায় রোকন উদ্দিনকে ফিরিয়ে আনার।
সরেজমিনে নেত্রকোনা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা ইউনিয়নের বাঘরুয়া গ্রামের মিরাজ আলী ও লুৎফুন্নাহার দম্পতির বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, চার সন্তানের মধ্যে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার রোকন উদ্দিন তৃতীয়। দরিদ্র পরিবারের ঘরে জন্মগ্রহণ করা রোকন উদ্দিনকে অনেক কষ্ট করে দিনমজুরি করে লেখা-পড়া শিখিয়েছেন পরিবার। লেখাপড়া শেষ করে ইঞ্জিনিয়ার রোকন উদ্দিন বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগদান করেন।
জাহাজ জলদস্যুদের কবলে পড়ার আগের দিন ইফতারের আগে মায়ের সঙ্গে কথা হয় বলে জানান রোকনের মা লুৎফুন্নাহার। পরে আর কথা হয়নি। পর দিন দুপুরে রোকন তার স্ত্রীর মোবাইলে ভয়েস মেসেজ দিয়ে জানান, রোকন জলদস্যুদের কবলে আটকা পড়েছে, তাদের এখন সোমালিয়ায় নেওয়া হচ্ছে।
ছেলের চিন্তায় বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন তার মা লুৎফুন্নাহার। বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন আত্মীয়স্বজনসহ এলাকাবাসী।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে রোকনের ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী তানিয়া বলেন, আটকের আগমুহূর্তে কয়েক মিনিট ভিডিও কলে স্বামীর সঙ্গে কথা হয়েছে। সে সময় তিনি দুশ্চিন্তা করতে নিষেধ করেন। ইউপি সদস্য আক্কাস উদ্দিন বলেন, গ্রামের ছেলের এমন খবরে হতবাক এলাকাবাসীও। বাবা-মা পরিবারের সদস্যসহ এলাকাবাসীও রোকনকে অনেক ভালো ছেলে হিসেবে জানেন।
মন্তব্য করুন