ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের বেড়াশোলা গ্রামের কামরুল লস্কার নামে এক কৃষকের ২ হাজার ড্রাগন গাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মধ্যরাতে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তার ৮০ শতক জমির মধ্যে ২৫ শতক জমির ২ হাজার ড্রাগন গাছ কেটে দিয়েছে।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) দিবাগত রাতে বেড়াশুলা গ্রামে মাঠে এ ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বেড়াশুলা গ্রামের মৃত তোয়াজ উদ্দীনের ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিস্তর এলাকা নিয়ে কামরুল ও তার ভাইয়ের রয়েছে ড্রাগন বাগান। তার মধ্যে ৮০ শতক ড্রাগন বাগান কামরুল লস্কারের। ড্রাগন গাছগুলো এতোমধ্যে বেশ সতেজ হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় দূর থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে গাছগুলো নিচ থেকে কাটা হয়েছে। ড্রাগন বাগানের ৮টি লাইনের অর্ধেক করে গাছের নিচ থেকে এক দেড় ফুট উঁচু করে কাটা হয়েছে।
কোনো একটি মহল শত্রুতাবশত এ ক্ষতি করেছে বলে ধারনা করছে গ্রামবাসি। তবে কে বা কারা এ ড্রাগন বাগানের গাছ কেটেছে এখনো সনাক্ত করতে পারেনি তারা।
এ ঘটনায় চাষির ন্যূনতম ৪-৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এলকাবাসির দাবি দুর্বৃত্তদের সনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনা হোক।
ক্ষতিগ্রস্ত ড্রাগন চাষী কামরুল লস্কার বলেন, ২ হাজারের বেশি ড্রাগন গাছ কেটে ফেলেছে কে বা কারা। কেটে দেওয়া গাছগুলো থেকে শুধু ১বার ফল বিক্রয় করেছি। এখন নতুন করে ফল ধরার সময় হয়েছিল। ২ বছর আগে ৮০ শতক জমিতে প্রায় ৮ হাজার ড্রাগন ফলের চারা রোপণ করা হয়েছিল। এর পেছনে তার প্রায় ১৫-১৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। শুক্রবার সকালে জমিতে এসে দেখতে পাই প্রায় ২ হাজারের বেশি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এতে ৪-৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে তার।
তিনি বলেন, ২০২২ সালে ৮০ শতক জমিতে ড্রাগণ চাষ শুরু করি। বাগানে মোট ৮ হাজার গাছ ছিল। যে ড্রাগন গাছ কাটা হয়েছে তার পরিমাণ ২৫ শতকের বেশি। বাগানের মাঝ থেকে ৮টি লাইনের অর্ধেক করে কেটে ফেলা হয়েছে। এ ড্রাগন বাগান করেতে এ পর্যন্ত ১৫-১৬ লাখ টাকা খরচ করা হয়েছে।
প্রথম বছরেই ১লাখ ৫০ হাজার টাকার ড্রাগন বিক্রয় করি। বাগান থেকে যে ড্রাগন গাছ কাটা হয়েছে সেখানে আনুমানিক ৪-৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি মনে করছেন। প্রশাসনের কাছে তার দাবি যারা এ ড্রাগন গাছ কেটেছে তাদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হোক।
এলাকার অপর এক ড্রাগন চাষী আবুল কালাম আজাদ বলেন, বেড়াশুলা গ্রামের ড্রাগন চাষী কামরুল ভাইয়ের ড্রাগন বাগানের প্রত্যেকটি গাছ নিচ থেকে এক থেকে দেড় ফুট উঁচু করে কেটে দিয়ে গেছে। যা একজন কৃষকের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। আমাদের দাবি যে দুর্বৃত্তরা এই নেক্কারজনক কাজ করেছে তাদেরকে যেন সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হয়।
মধুহাটি ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রহিম বাদশা বলেন, আমার বেড়াশুলা ব্লকের ড্রাগন চাষী কামরুলের ড্রাগন বাগানের ৮টি লাইনের অর্ধেক করে ড্রাগন গাছ দুর্বৃত্তরা কেটে দিয়েছে। এতে করে কৃষকের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। ড্রাগন গাছগুলো নিচ থেকে ১ থকে দেড় ফুট উচ্চাতা রেখে কাটা হয়েছে। এতে করে তার অনেক ক্ষতি হয়েছে।
মধুহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন বলেন, কামরুল লস্কারের ড্রাগন বাগানে কে বা কারা ড্রাগন গাছ কেটে দিয়েছে। এর জন্য অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে তার। তবে কে এই জঘন্য কাজ করছে তা এখনো জানা যায়নি। তবে প্রশাসনের কাছে আবেদন এই কাজের সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন তাকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া হোক।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মো. শাহিন উদ্দীন জানান ক্ষতিগ্রস্থ চাষি একটি অভিযোগ দিয়েছিল। সেটা আবার তিনি প্রত্যাহার করে নিয়ে গেছেন। তবে পুলিশ তদন্ত অব্যাহত রেখেছেন। দোষি সনাক্ত হলে আইনের আওতায় আনা হবে।
মন্তব্য করুন