পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৪, ০২:৫৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোই ১০ গ্রামের ভরসা

বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হচ্ছেন স্কুলশিক্ষার্থীরা। ছবি : কালবেলা
বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হচ্ছেন স্কুলশিক্ষার্থীরা। ছবি : কালবেলা

বুড়াইল নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে রয়েছেন রংপুরের পীরগাছার ১০টি গ্রামের শিক্ষার্থীসহ হাজারও মানুষ। ঝুঁকিপূর্ণ নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোই তাদের চলাচলে একমাত্র ভরসা।

সোমবার (১৯ ফ্রেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার জনজীবন গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ৬০ মিটার লম্বা বাঁশের সাঁকো দিয়ে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়া পার হচ্ছেন। ভ্যান, রিকশা, সাইকেল, মোটরসাইকেল ধরে নিয়ে যাচ্ছেন চালকরা।

ব্রিজ না থাকায় নড়বড়ে এ সেতুতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। বর্ষা মৌসুমে সাঁকোটি ভেঙে গেলে দুর্ভোগের শেষ থাকে না সেখানকার বাসিন্দাদের। বিশেষ করে রোগীদের হাসপাতালে আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে বিপাকে পড়েন তারা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বারবার আশ্বাসেও সেখানে হচ্ছে না কোনো সেতু। এতে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, উপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়নের জনজীবন গ্রামের দুলু হাজির বাড়ির পাশে বুড়াইল নদীর ওপর প্রায় ৩০ বছর আগে থেকে বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল শুরু হয়। তখন থেকে স্কুল-কলেজ, হাট-বাজার, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কারণে জনজীবন, গোবড়াপাড়া, হরিরাম, জিগাবাড়ি, চিলাখাল, নয়াগ্রাম, রতনপুর, বাগভাসা, জ্ঞানগঞ্জ, জামতলাসহ বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা সেই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করে আসছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে সাঁকোটি অনেক সময় ভেঙে যায়। তখন মানুষের দুর্ভোগের শেষ থাকে না। মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটে। এখানে অ্যাম্বুলেন্স ঢুকে না। জরুরি রোগী হাসপাতালে সময়মত নিতে পারি না।’

স্কুলশিক্ষার্থী খুশি আক্তার বলেন, ‘আমরা যখন এই সাঁকো দিয়ে চলাচল করি তখন আমাদের ভয় লাগে। বর্ষাকালে সাঁকো ভেঙে গেলে আমাদের কলা গাছের ভেলায় করে যাতায়াত করতে হয়। অনেক সময় বই ও কাপড় ভিজে যায়। আমরা সময়মতো স্কুলে যেতে পারি না। সাঁকোর বদলে এখানে যদি একটা ব্রিজ হতো তাহলে আমাদের জন্য খুব ভালো হতো।’

দেওয়ান সালেহ আহমেদ দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মোকছেদ আলী বলেন, ‘আমি এই সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করি। সাঁকোটি খুব ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে একটা ব্রিজ করা জরুরি।’

আরেক স্থানীয় বাসিন্দা ফরমান আলী বলেন, ‘এই সাঁকোটি দিয়ে হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। এখানে সেতু নির্মাণ ও রাস্তার জন্য আমরা এলাকাবাসী সরকারকে জমিও দিয়েছি। জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাস ও সরকারি কর্তৃপক্ষ কয়েকবার মাপ দেওয়ার পরও কেন যে এখানে সেতু হচ্ছে না, কী যে আমাদের অপরাধ তাও বুঝতেছি না।’

ইউপি সদস্য রেজাউল করিম রেজা বলেন, ‘এই এলাকার মানুষের দুঃখ এই বাঁশের সাঁকো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন অগ্রযাত্রা যেন এখানে এসে থমকে গেছে। আমরা চাচ্ছি এই বাঁশের সাঁকোটি দ্রুত সেতুতে পরিণত হোক। এখানকার মানুষের ভোগান্তি লাঘব এটাই চাই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল হক সুমন বলেন, ‘জগজীবন মৌজায় বুড়াইল নদীর ওপর সেতু নির্মাণের বিষয়ে আমরা অবগত আছি। সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করে একটা সেতু নির্মাণের ব্যাপারে খুব শিগগির উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দেশের প্রথম আন্তঃচেইন হোটেল ‘ডি মোর’ লয়্যালটি ক্লাবের যাত্রা শুরু

২৮ জেলে-মাঝিসহ ট্রলার নিয়ে গেছে ভারতীয় কোস্টগার্ড

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে সুপার ওভারে ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

হোয়াটসঅ্যাপে ফিরছে পুরোনো সেই ফিচার, যেসব সুবিধা পাবেন

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য কামনায় রাজধানীতে শীতবস্ত্র বিতরণ

পোল্যান্ডে প্যাট্রিয়টসহ সেনা মোতায়েন নেদারল্যান্ডসের

দরজার ধাক্কায় আঙুল ভেঙে ফেললেন তারকা খেলোয়াড়

নরসিংদী কেন ভূমিকম্পের কেন্দ্র?

বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলিম-খ্রিষ্টানে ভেদাভেদ নেই : ড. এমএ কাইয়ুম

যতদিন ইনসাফ কায়েম না হবে ততদিন সংগ্রাম চলবে : সাদিক কায়েম

১০

নির্বাচন উৎসবমুখর করতে সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা 

১১

গ্রামীণ ব্যাংকের আরও এক শাখায় অগ্নিকাণ্ডের চেষ্টা

১২

নিলামে অংশ নিলেও ক্রিকেটার কেনার ইচ্ছে নেই এই ফ্র্যাঞ্চাইজির

১৩

তিন মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিল

১৪

শীতে কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকি বাড়ে, এই ৪ নিয়ম মানলে বিপদ এড়ানো সম্ভব

১৫

ভূমিকম্পে হতাহতদের দেখতে হাসপাতালে বিএনপির স্বাস্থ্য সম্পাদক 

১৬

ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় জামায়াত আমিরের শোক

১৭

বালুর ট্রাকে লুকানো ছিল ৫ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য, অতঃপর...

১৮

সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একান্ত আলাপ খালেদা জিয়ার 

১৯

অতীত ভাবার বিষয় নয়, উন্নয়নের রাজনীতি করতে চাই : বাবর

২০
X