চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার পুরোনো হাউলী গ্রামে চলছে রমরমা সুদের ব্যবসা। সুদের ওপর নেওয়া মূল টাকার ৮-১০ গুণ টাকা বেশি ফেরত দিলেও শোধ হচ্ছে না ঋণ। বর্তমানে সুদের টাকা দিতে না পারায় এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ঋণ বা সুদে টাকা ধার নেওয়া ভুক্তভোগী ৮টি পরিবার।
এমন আজব সুদের ফাঁদে পড়ে গ্রামের অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়েছেন। কেউ কেউ সুদের টাকার বোঝা টানতে না পেরে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে ৮ জন ভুক্তভোগী চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ডা. কিসিঞ্জার চাকমা ও পুলিশ সুপার আরএম ফয়জুর রহমান বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগকারীরা হলেন উপজেলার হাউলি গ্রামের বখতিয়ার হোসেনর স্ত্রী মোছা. রুবিনা খাতুন, আতর আলির স্ত্রী শাহিনা খাতুন, ছবদুলের স্ত্রী রমেলা খাতুন, আকু হোসেনের স্ত্রী সুরাইয়া খাতুন, রশিদুলের স্ত্রী ছালেহা খাতুন, বাহারুলের স্ত্রী ডলি খাতুন, খতিবের স্ত্রী সেলিনা খাতুন ও নাসির উদ্দীনের স্ত্রী শিউলি খাতুন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পুরোনো হাউলী গ্রামের করম আলির স্ত্রী সুদ ব্যবসায়ী লাখিয়া খাতুনের নিকট সাদা (ব্লাঙ্ক) ব্যাংক চেক জমা দিয়ে একই গ্রামের শাহিনা খাতুন প্রতিমাসে ৮ হাজার টাকা সুদে ৫০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। এভাবে প্রতিমাসে সে সুদের কিস্তিতে ৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা দেওয়ার পরও ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দাবি করছে। একই গ্রামের সুরাইয়া খাতুন ৪০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে একইভাবে ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করার পরও ২ লাখ টাকা দাবি করছে। ডলি খাতুন ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ৪ লাখ টাকা পরিশোধ করার পরেও ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, রমেলা খাতুন ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করার পরও ৪ লাখ টাকা, রুবিনা খাতুন ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করেও আরো ৩ লাখ টাকা দাবি করে আসছে লাখিয়া খাতুন। এই টাকা পরিশোধ না করলে চেক ফেরত দেওয়া হবে না।
অভিযোগ পত্রে আরও উল্লেখ করেন, লাখিয়া খাতুন ভুক্তভোগীদের নিকট থেকে কৌশলে বা হুমকিধমকি দিয়ে জামানত হিসেবে বিভিন্ন ব্যাংকের চেক নিয়ে তাদেরকে জিম্মি করে রেখেছে। এ ছাড়াও সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে রেখে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানোসহ মামলার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর এমন অভিযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উভয়পক্ষকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে লাখিয়া খাতুন কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। সে মুচলেকা দিয়ে চেক ও স্ট্যাম্প ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
মন্তব্য করুন