এবার দেশাত্মবোধক গানে জীবন্ত পুতুলের আদলে নাচ করলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভাইরাল হওয়া সেই স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালে স্বাধীনতা দিবসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তারা এই নান্দনিক নাচটি পরিবেশন করেন।
শহরের নিয়াজ মোহাম্মদ স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসনের আয়োজিত ডিসপ্লে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এতে সূর্যমূখী কিন্ডারগার্টেন ও গার্লস স্কুলের ৪৯ শিশু নৃত্যশিল্পী প্রায় ৪ মিনিট জীবন্ত পুতুলের আদলে মনোমুগ্ধকর এই নাচটি প্রদর্শন করেন। তাদের অপরূপ প্রদর্শনীতে মনে হয় যেন পুতুলে প্রাণের ছোঁয়া লেগেছে। সে সঙ্গে বিলুপ্ত হতে থাকা প্রাচীন ঐতিহ্য যেন আবারও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হারিয়ে যাওয়া পুতুল নাচের ঐতিহ্যকে নবরূপে নতুন প্রজন্মের কাছে আবারও তুলে ধরায় জীবন্ত পুতুল নাচটি সবার প্রশংসায় ভাসে। প্রায় বিলুপ্ত এই লোক সংস্কৃতিকে দেশাত্মবোধক গানের মাধ্যমে নতুন করে ফুটিয়ে তোলায় খুশি অংশ নেয়া শিশু নৃত্যশিল্পীরাও।
তারা জানান, মাত্র তিন দিনের প্রস্তুতি নিয়ে নাচটি কোরিওগ্রাফ করেছেন সূর্যমূখী কিন্ডার গার্টেন ও গার্লস স্কুলের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ আল সাইফুল আমিন জিয়া। তাদের প্রত্যাশা এই নাচটিও আগেরবারের মতো সবার হৃদয় জয় করবে পাশাপাশি নতুন প্রজন্মও জানবে নিজস্ব সংস্কৃতি সম্পর্কে।
পুতুল নাচের অংশ নেওয়া মুনতাহা জানায়, সে আগে কখনো পুতুল নাচ দেখেনি। ডিসপ্লের জন্য বেশ কয়েকবার দেখেছে। এরপর প্রশিক্ষক তাদের তৈরি করেছেন। এ নাচে অংশ নিতে পেরে সে বেশ খুশি।
শিক্ষার্থী নাফসুন জানান, আমরা আগে স্কুলের বার্ষিক ক্রিয়া প্রতিযোগিতায় লোক সংগীতে পুতুল নাচের আদলে নেচে ছিলাম। এবার স্বাধীনতা দিবসে দেশাত্মবোধক গানে পুতুলের আদলে নেচে অনেক ভালো লেগেছে। আমরা চাই এই লোকজ সংঙ্কৃতি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ুক।
অভিভাবক শ্যামল মোদক ও প্রিয়াংকা সাহা বলেন, আমাদের সন্তানরা এ আয়োজনের গর্বিত অংশীদার হতে পেরেছে। আমাদের খুব লাগছে। এ নাচের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য ফুটে উঠেছে।
নাচের পরিকল্পনাকারি ও প্রশিক্ষক মোহাম্মদ আল সাইফুল আমিন জিয়া জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুতুল নাচের ঐতিহ্য ফেরাতে এ প্রচেষ্টা। এতে তিনি অনেকটা সফল হয়েছেন বলে দাবি করেন।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন সুলতানা বলেন, পুতুল নাচ আমাদের ঐতিহ্য। আমরা চাই শিশুরা ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে থাকুক। এ ধরণের আয়োজনকে সমৃদ্ধ করতে আমাদের সহযোগিতা থাকবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, শিশুরা পুতুল নাচের ডিসপ্লে বেশ চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেছে। জেলা প্রশাসন তাদের পাশে থাকবে।
এদিকে ডিসপ্লে প্রদর্শনীতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে এই নাচটি। পরে শিক্ষার্থীসহ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
মন্তব্য করুন