সপ্তাহের ব্যবধানে তরমুজের দাম কমলেও দেখা দিয়েছে ক্রেতা সংকট। শুরুর দিকে বাজারে তরমুজের চাহিদা থাকলেও বর্তমানে চাহিদা কমে যাওয়ায় ক্রেতা সংকটে ভুগছেন কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার তরমুজ বিক্রেতারা। তরমুজ পচনশীল পণ্য হওয়ায় লাভ তো দূরে থাক পুঁজি হারানোর শঙ্কায় রয়েছে ব্যবসায়ীরা।
শুরুর দিকে তরমুজের আকাশচুম্বী দাম, বেশি দামে বিক্রির উদ্দেশ্যে অপরিপক্ব তরমুজ বাজারজাত, অধিক পরিমাণে তরমুজ সরবরাহ ও আবহাওয়ায় গরমের তীব্রতা না থাকায় তরমুজের চাহিদা অনেকটা কমে এসেছে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার সদর বাজার এলাকায় তরমুজ দোকানে নেই ক্রেতাদের ভিড়। নানা সাইজের তরমুজের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন দোকানীরা। রমজানে তরমুজের বেচাকেনা যে হারে হওয়ার কথা সে তুলনায় দোকানগুলোতে নেই বেচাকেনা। নির্দিষ্ট তরমুজের দোকান ছাড়াও পিক-আপ ভ্যান ও অটোরিকশা করেও মাইকিং করে তরমুজ বিক্রির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তরমুজ বিক্রেতারা। তবুও যেন আশানুরূপ ক্রেতা পাচ্ছেন না তারা। এ অবস্থা চলতে থাকলে তরমুজ বিক্রেতাদের তরমুজ নষ্ট হয়ে লাভের পরিবর্তে লোকসানও গুনতে হতে পারে।
তরমুজ বিক্রেতা মুমিনুল ইসলাম বলেন, এ বছর রমজানের শুরুর দিকে বাজারে তরমুজের চাহিদা ও দাম দুটোই ভালো ছিল। সেসময় তাপমাত্রাও ছিল, যে কারণে তরমুজের ক্রেতা ছিল বেশি। এখন তরমুজের দাম অর্ধেকের চেয়েও কমে গেলেও আশানুরূপ ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। এ দিকে আবহাওয়ায় এখন গরমের তীব্রতা নেই, যে কারণে তরমুজের চাহিদা অনেকটা কমে গেছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমাদের সরবরাহকৃত তরমুজ বিক্রি করতে না পারলে লাভের পরিবর্তে আমাদের লোকসান গুনতে হবে।
তরমুজ বিক্রেতা উপজেলার সাহেবাবাদ বাজারের বিল্লাল হোসেন বলেন, বাজারে হঠাৎ করেই তরমুজের ক্রেতা কমে গেছে। তরমুজের দামও অনেক কমেছে তবুও তেমন ক্রেতা নেই। আমাদের মজুদ অনুযায়ী ক্রেতা না পেলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব। আমরা লোকসান থেকে বাঁচতে পিকআপ ভ্যানে করে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে তরমুজ বিক্রির চেষ্টা করে যাচ্ছি। ক্রেতা না বাড়লে আমাদেরকে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, দু'দিন আগে একটি তরমুজ কিনেছিলাম, ভেতরে কিছুটা লাল হলেও নেই তরমুজের পরিপূর্ণ স্বাদ। বেশি দামে বিক্রির জন্য অপরিপক্ক তরমুজ বাজারজাত করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এ কারণেও হয়তো বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কম হতে পারে।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মফিজুল ইসলাম বলেন, এ বছর বাজারে তরমুজ বেশি সরবরাহ হয়েছে, সেই অনুপাতে ক্রেতার সংখ্যা কম। রোজায় গরম পড়লে ক্রেতা হয়তো আরও বাড়বে। তরমুজের দাম কমলেও ভালো তরমুজ তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না।
চান্দলা মডেল হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক মো. অপু খান চৌধুরী বলেন, ক্রেতা সংকট সাময়িক সময়ের জন্য। গরমের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে তরমুজের চাহিদাও বাড়বে। এ বছর তরমুজের সরবরাহও বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে শুরুর দিকে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর দৌরাত্ম্যের কারণে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে একটি নীরব ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে সিজনাল ফল হিসেবে এ সময়টাতে তরমুজ খাওয়া উচিত।
মন্তব্য করুন