লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মসজিদ থেকে তুলে নিয়ে আলী আকবর বদ্দার নামে এক জেলেকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে কমলনগর কোস্টগার্ডদের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) জুমার নামাজের সময় এ ঘটনা ঘটে। আকবর উপজেলার ৫নং চর ফলকন ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মোসলেউদ্দিন বদ্দার বাড়ির মোসলেউদ্দিন বদ্দারের মেঝ ছেলে।
আকবরের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ মার্চ কোস্টগার্ড আকবর মাঝির বাড়িতে এসে চুক্তির মাসিক এক লাখ টাকা না দেওয়ায় ঘর থেকে জাল বের করে পুড়িয়ে দেয় এবং টাকা না দেওয়ায় এর পরিণতি ভালো হবে না বলে হুমকি দিয়ে যায়। আজ আকবর মাঝি জুমার নামাজ পড়তে গেলে মসজিদে ঢোকার সময় তাকে ধরে ক্যাম্পে আনার পরিবর্তে স্পিড বোটের মাধ্যমে নদীর মাঝের চরে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন করে। পরবর্তীতে মুমূর্ষু অবস্থায় আকবর মাঝিকে ক্যাম্পে নিয়ে আসে।
আকবরের মা বলেন, বুধবার দুপুরে কোস্টগার্ডের লোকজন আমার বাড়িতে এসে আমার ছেলের মাছ ধরার জাল পুড়িয়ে দেয়। আমার ছেলের একমাত্র সম্পদ ছিল এই জালটুকু, হাতেপায়ে ধরেও রেহাই পাইনি আমরা।
আকবর মাঝির ভাই আজগর বলেন, প্রত্যেক মাসে কোস্টগার্ডের সঙ্গে মাসিক চুক্তিতে নদীতে মাছ ধরতেন আকবর। চলতি মাসের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় কোস্টগার্ড আকবরকে দিনের বেলায় মসজিদ থেকে ধরে আনে এবং পাশবিক নির্যাতন করে।
স্হানীয় জেলেরা বলেন, শুধু আকবর মাঝিই নয় এলাকার শত শত জেলেরা কোস্টগার্ডের এজেন্ট স্হানীয় প্রভাবশালী খোকন মাঝি ও কালু মাঝির মাধ্যমে জেলেদের কাছ থেকে এভাবে টাকা নেয়।
খবর নিতে কমলনগর কোস্টগার্ড অফিসে গেলে ভবনের নিচ তলা তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। অনেকবার মোবাইল ফোন ও সরাসরি যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও পাওয়া যায়নি। কোস্টগার্ড জোনাল কমান্ডারের মোবাইলে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুছবলেন, স্থানীয় জেলেদের কাছ থেকে ঘটনাটি জেনেছি। কোস্টগার্ডের অফিসারকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এ খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে স্হানীয় শতশত জেলে ও সাধারণ মানুষ জড় হয়ে বিক্ষোভ করলে কমলনগর থানার এসআই বিপ্লব সিংহ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
এ ব্যাপারে এসআই বিপ্লব সিংহ বলেন, আকবর মাঝির বিরুদ্ধে কোস্টগার্ডের অফিসারদের ওপর হামলা করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
কমলনগর থানার ওসি তহিদুল ইসলাম বলেন, কোস্টগার্ডের জোনাল কমান্ডারের ফোন পেয়ে ফোর্স পাঠানো হয়। জেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি।
মন্তব্য করুন