নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার টেপাখরিবাড়ি, গয়াবাড়ি এবং খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ইউপি নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শনিবার (১৫ জুলাই) মধ্যরাত থেকে শেষ হচ্ছে। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার ৩২ ঘণ্টা আগে থেকে কোনো প্রার্থীই প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবে না।
শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থী ও কর্মী সমর্থকরা। গয়াবাড়ি ও টেপাখরিবাড়ি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগে বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী থাকায় ভোটগ্রহণের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে রয়েছে নানা শঙ্কা ও উৎকণ্ঠা।
বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রার্থীরা কর্মী-সমর্থকসহ হাটবাজার এবং ভোটারের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। নির্বাচনী মাঠে দলীয় ও বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনায় যে কোনো মুহূর্তে সংঘাতের শঙ্কা কাজ করছে ভোটার ও প্রার্থীদের মধ্যে।
এদিকে ভোটের দিন পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ অথবা স্বাভাবিক থাকবে কিনা সেটা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে প্রার্থী ও ভোটারদের মাঝে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমালোচনায় ভোটের উত্তাপও ছড়ানো হচ্ছে কোথাও কোথাও। এমন পরিস্থিতিতে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে সুষ্ঠু ভোট প্রদানের নিশ্চয়তা চান ভোটাররা।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তিন ইউনিয়ন পরিষদে বিভিন্ন প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন ১৩৯ জনপ্রার্থী। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১৬ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৩২ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৯১ জনপ্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই তিন ইউনিয়নে মোট ভোটারের সংখ্যা ৫০ হাজার ৪৯৭ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ২৫ হাজার ৩৮০ এবং মহিলা ভোটার ২৫ হাজার ১১৭ জন। আগামী ১৭ জুলাই সোমবার ২৭টি ভোটকেন্দ্রের ১৬০টি ভোট কক্ষে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও তিন ইউপি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, শনিবার মধ্যরাত থেকে নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা বন্ধ হয়ে যাবে। নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মাঠে নামছেন। ভোট প্রদানের সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করতে সকল ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ডিমলা থানার ওসি মো. লাইছুর রহমান বলেন, নির্বাচনী এলাকায় সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বিরাজ করছে। কেউ বিশৃঙ্খলা করতে চাইলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ তৎপর রয়েছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানালেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন দৈনিক কালবেলাকে বলেন, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ মাঠে কাজ করছেন। আচরণবিধি ভঙ্গের কোনো সুযোগ নেই। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নির্বাচনী মাঠে মোতায়েন থাকবে পুলিশ, বিজিবি ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা। এ ছাড়াও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রেও মোতায়েন থাকবে নির্দিষ্ট সংখ্যক পুলিশ।
মন্তব্য করুন