কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে দিনে ও রাতে প্রচণ্ড গরম পড়ছে। এদিকে দিনে ও রাতে পর্যায়ক্রমে চলছে লোডশেডিং। প্রচণ্ড এই গরম আর লোডশেডিংয়ে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে উপজেলা সদরসহ অন্যান্য বাজারে চাহিদা বেড়েছে রিচার্জেবল ফ্যানসহ রিচার্জেবল লাইট ও বৈদ্যুতিক পাখার।
এদিকে ক্রেতারা বলছেন, তীব্র গরমের এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দোকানিরা ফ্যানের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে। যদিও ব্যবসায়ীদের দাবি, সঠিক দামেই তারা এসব ইলেকট্রনিকস সামগ্রী বিক্রি করছেন। তারাও পাইকারি বাজার থেকে এসব সামগ্রী কিনে আনছেন। ক্রয়মূল্য থেকে সীমিত লাভেই বিক্রি করছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) উপজেলার সদর বাজারের হাজী মার্কেট, রশীদ মার্কেট, ভিশন শোরুম ও উপজেলার অন্যান্য ইলেকট্রনিকস মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি দোকানেই ক্রেতাদের ভিড়। এসব ক্রেতাদের মধ্যে রিচার্জেবল ফ্যানের ক্রেতা বেশি। কেউ কেউ কিনছেন বৈদ্যুতিক পাখা ও রিচার্জেবল লাইট। ইলেকট্রনিকস এসব পণ্যের দাম দোকানিরা বেশি নিচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলছেন ক্রেতারা। তবে বেশি দামের কারণে অনেক ক্রেতা দামদর করে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ফিরে যাচ্ছেন।
কথা হয় ক্রেতা কামরুজ্জামান সোহেলের সঙ্গে, তিনি বলেন, গরমের শুরুতেই প্রখর রোদ আর তীব্র গরম ও পল্লী বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে শিশু ও বৃদ্ধসহ মানুষজন দিশেহারা হয়ে পড়ছে। তাই শিশু ও বৃদ্ধদের কথা ভেবে দোকানে চার্জার ফ্যান কিনতে এসেছি। তবে চার্জার ফ্যানের দাম আকাশচুম্বী। বাজেটের মধ্যে ফ্যান পাচ্ছি না। আরও কয়েকটি দোকান ঘুরে বাজেটের মধ্যে না পেলে বেশি দামেই ফ্যান কিনে নিয়ে যাব।
উপজেলা সদর বাজারের হাজী মার্কেটে রিচার্জেবল ফ্যান কিনতে আসা ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, একদিকে তীব্র তাপদাহ, অন্যদিকে বিদ্যুতের লোডশেডিং, এতে পরিবারের শিশুরাসহ সবাই অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিতো আছেই, তাই একটি চার্জার ফ্যান কিনতে এসেছি।
ভিশন শোরুমে কথা হয় মহিবুর রহমানের সঙ্গে। তিনি উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের দক্ষিণ তেঁতাভূমি এলাকার বাসিন্দা। তিনি জানান, গত কয়েকদিনের তীব্র গরমে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। সিলিং ফ্যানের বাতাসও ঠিকমতো কাজে আসছে না। তাই তিনি তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে সিলিং ফ্যানের পাশাপাশি ইলেকট্রনিক টেবিল ফ্যান চালানোর পরিকল্পনা করেছেন। এ জন্য তিনি ইলেকট্রনিক টেবিল ফ্যান কিনতে এসেছেন।
জহিরুল ইসলাম নামে এক বিক্রেতা বলেন, হঠাৎ করে তীব্র গরম পড়ায় চার্জার ফ্যানসহ বৈদ্যুতিক ফ্যান ও চার্জার লাইটের চাহিদা বেড়েছে। অন্যান্য গ্রীষ্মকালের তুলনায় এবার বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। বিশেষ করে চার্জার ফ্যানের চাহিদা বেশি। সকল শ্রেণিপেশার ক্রেতার সমাগম হচ্ছে।
পণ্যের দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আরেক ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা খুচরা ব্যাবসায়ী, পাইকারি বাজার ও শোরুম থেকে যে দরে কিনে আনি তার থেকে সামান্য লাভেই বিক্রি করছি। গরম পড়ার আগে যে দামে ফ্যান বিক্রি করতাম এখনো সেই দামেই বিক্রি করছি। তবে দু-একটা কোম্পানির পণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে। খুব বেশি গরম পড়ায় সব ধরনের ফ্যানের চাহিদা বেড়েছে, তবে চাহিদা অনুযায়ী বাজারে ফ্যানের সংকট রয়েছে।
মন্তব্য করুন