দীর্ঘদিন প্রবাসে কাটিয়ে দেশে ফিরেছেন মো. আলমগীর হোসেন। আগামী সপ্তাহে আবারও বিদেশে চলে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস তিনিসহ আপন সন্তান আর মামির প্রাণ কেড়ে নিল অজ্ঞাত কার্ভাডভ্যান।
শুক্রবার (৩ মে) মধ্যরাতে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাউশিয়া এলাকায় মানাবে ওয়াটার পার্কের সামনে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় একই পরিবারের তিনজন নিহত হয়েছেন।
তারা হলেন নিহতরা হলেন চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার কাদরা গ্রামের আলমগীর হোসেন, তার ছেলে জহিরুল ইসলাম, তার মামি রাহেলা বেগম। আহতরা হলেন, আলমগীরের বড় ছেলে নজরুল ইসলাম ও প্রাইভেটকার চালক ইব্রাহিম খলিল সুজন।
থানায় গিয়ে দেখা গেছে, গজারিয়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে বুঝে নিতে এসে স্বজনদের আহাজারি কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে থানা চত্বর। এভাবে পরিবার তিনজনকে হারিয়ে পাগল প্রায় নিহত আলমগীর হোসেনের স্ত্রীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা। স্বজনরা বিলাপ করে বলছেন, এমন দুর্ঘটনার শিকার আল্লাহ তুমি আর কাউকেই করো না।
নিহত আলমগীর হোসেনের শ্যালক মো. সাইদ মিয়া বলেন, আলমগীর হোসেন কিছু দিন আগে দেশে ফিরেছেন। তিনি ঢাকার ডেমরা এলাকার বসবাস করতেন। দেশে ফিরে এসে পরিবার নিয়ে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর শাহরাস্তি উপজেলাযর কাদরা গ্রামে বেড়াতে গিয়েছিলেন। বেড়ানো শেষে শুক্রবার সাড়ে ১০টার ঢাকায় রওনা হন। তাদের সঙ্গে আলমগীর হোসেনের মামি রাহেলা বেগমও ছিলেন। তিনি ডাক্তার দেখানোর জন্য ঢাকাতে আসছিলেন। কিন্তু এভাবে পরিবারের তিনজন প্রাণ হারাবে কল্পনাও করিনি।
ভবেরচর হাইওয়ে থানার ওসি হুমায়ুন কবির কালবেলাকে বলেন, শুক্রবার মধ্যরাতে ঢাকাগামী প্রাইভেটকারটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া অংশের বাউশিয়া মানাবে ওয়াটার পার্কের সামনে এলে পেছন থেকে একটি কাভার্ডভ্যান ধাক্কা দেয়। এ সময় কারটি রাস্তার পাশের খাদে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলে মারা যান তিনজন। চালকসহ আহত দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, মরদেহগুলো স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাভার্ডভ্যানটিকে জব্দের চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গজারিয়া ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ রিফাত মল্লিক বলেন, রাত প্রায় ২টার দিকে দুর্ঘটনার সংবাদ আসে। সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করি। এ সময় হতাহত সবাইকে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক নাদিয়া আফরিন বলেন, রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে হাসপাতালে ৫ জন রোগী আসে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষ করে তিনজনকে মৃত ঘোষণা করি। নজরুল ইসলাম এবং সুজনের নামের দুই রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন