দীর্ঘ ছয় মাস পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে নরসিংদীতে নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদীর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকন।
মঙ্গলবার (২১ মে) দুপুরে নরসিংদীর চিনিশপুরস্থ তার নিজ বাসভবন ও জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
খায়রুল কবির খোকন গত ৮ মে জামিনে কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর মঙ্গলবারই প্রথম নরসিংদী আসেন। তিনি এলাকায় আসার খবরে চিনিশপুর বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে কেউ ফুলের তোড়া আবার অনেকে ফুলের মালা নিয়ে প্রিয় নেতাকে শুভেচ্ছা জানাতে ছুটে আসেন। এ সময় নরসিংদী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ জলিল, অ্যাডভোকেট আব্দুল বাছেদ, সদস্য সচিব মঞ্জুর এলাহী, শহর বিএনপির সভাপতি গোলাম কবির কামাল, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য মহসীন হোসেন বিদ্যুৎ, জেলা বিএনপির সদস্য জায়দুল কবিরসহ বিভিন্ন থানা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২০২৩ সালের ২৫ অক্টোবর রাতে রাজধানীর একটি বাসা থেকে খায়রুল কবির খোকনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই বছরের গত ২৬ জানুয়ারি নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী মাইন উদ্দিন ভূঁইয়াকে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি পদ দেওয়া হয়। এতে তার অনুসারী নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে আগুন দেন এবং পরে ভাঙচুর করেন। এরপর কমিটি বাতিলের দাবিতে বিভিন্নস্থানে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের ২৫ মে বিকেলে ছাত্রদলের বহিষ্কৃত নেতারা ছাত্রদলের নতুন কমিটি বাতিলের দাবিতে শতাধিক মোটরসাইকেল বহর নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি জেলা বিএনপির চিনিশপুরের অস্থায়ী কার্যালয়ের সড়কে ঢুকার পর দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয় জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বহিষ্কৃত নেতা ছাদিকুর রহমান ও তার অনুসারী আশরাফুল হক। পরে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
পরে ওই ঘটনায় নিহত ছাদিকুরের ভাই আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে নরসিংদী মডেল থানায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, তার স্ত্রী শিরিন সুলতানাসহ জেলা বিএনপির ৩০ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৩৫ থেকে ৪০ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সে মামলায় গত ২০২৩ সালের ২৫ অক্টোবর রাতে রাজধানীর একটি বাসা থেকে খায়রুল কবির খোকনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে খোকন উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। ২০২৩ সালের ২৭ জুলাই খোকনের জামিনের মেয়াদ শেষে হয়ে যাওয়ার পর খোকন আদালত থেকে আর স্থায়ী জামিন নেয়নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ২৫ অক্টোবর রাত ৩টার দিকে খায়রুল কবির খোকনকে ঢাকায় তার ভাইয়ের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেই থেকে কারাগারেই ছিলেন খায়রুল কবির খোকন। দীর্ঘ সাড়ে ছয় মাস কারাভোগের পর গত ৮ মে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি লাভ করেন।
মন্তব্য করুন