শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৪, ০৩:১৭ এএম
অনলাইন সংস্করণ

মৌলভীবাজারে বীজ আলু চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা

বীজ আলু চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা। ছবি : কালবেলা
বীজ আলু চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা। ছবি : কালবেলা

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বীজ আলু চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে এ অঞ্চলে আলু চাষে বিপ্লব ঘটানোর সম্ভব বলে ধারণা করছেন স্থানীয় বিএডিসি’র কর্মকর্তারা। যদি প্রচলিত জাতের বাইরে গিয়ে শিল্পে ব্যবহার ও রপ্তানি যোগ্য আলু বেশি করে চাষ করা যায়, তাহলে আলু রপ্তানি করা যাবে। এতে যেমন কৃষকরা লাভবান হবে, তেমনি লাভবান হবে সরকার।

জানা য়ায, শ্রীমঙ্গল অঞ্চলের আওতায় রয়েছে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও ব্রাহ্মনবাড়ীয়া জেলা। এরমধ্য এবার মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে ৩৫ একর জমিতে বীজ আলু চাষ করা হয়েছে। ফলন হয়েছে প্রায় ২৪৫ টন। এ থেকে ৭৫.৬০০ টন আলু বীজ সরকারিভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

আলুর ফলন দেখে খুশি কৃষকরা। তবে সেচ ও কৃষকের জমির মালিকানা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে বিএডিসি। সেচের ব্যবস্থা না থাকায় এ অঞ্চলে অনেক জমি পতিত থাকে। অনেক জমি চা বাগানের মালিকানাধীন। অনেক জমির মালিক আবার প্রবাসী। এসব জমি বর্গা চাষ নিয়ে কৃষকরা ফসল ফলান। আর জমির মালিকানা না থাকায় অনেক কৃষক ব্যাংক ঋণ বা ভর্তুকি সুবিধা পান না। তাই ইচ্ছা থাকলেও কৃষকদের দিয়ে ব্যাংক ঋণের আওতায় আলু চাষ করাতে পারে না বিএডিসি।

আরও জানা যায়, চলতি বীজ আলু সংরক্ষণ মৌসুমে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের উদ্যোগে শ্রীমঙ্গল অঞ্চলে বীজ আলুর চাষ করা হয়েছে। উৎপাদিত এই বীজ আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করা হবে। পরে নভেম্বর মাসে রোপন মৌসুমে চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের মধ্যে এই বীজ আলু বিরতণ করা হবে।

বিএডিসি’র শ্রীমঙ্গল অফিস থেকে জানা যায়, মানসন্মত বীজ আলু উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণের লক্ষ্যে কৃষকদের দিয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ৮ একর, মৌলভীবাজারের গিয়াসনগরে ৪ একর ও হবিগঞ্জের মাধরপুর উপজেলায় পরমানন্দ গ্রামে ৩৮ একর জমিতে বীজ আলু চাষ করা হয়। এখান থেকে উৎপাদিত হবে প্রত্যায়িত শ্রেণির বীজ আলু। এখানে সানসাইন (বিএডিসি আল-১), এলুয়েট (বারি আলু-৯০) ও ডায়মন্ড জাতের উচ্চ ফলনশীল আলুর বীজ রোপন করা হয়েছিল। এরমধ্য সানসাইন আলুর ফলন খুব ভালো হয়েছে।

বিএডিসি জানায়, এ অঞ্চলের মাটি এসিডিক হওয়ায় সানসাইন বাদে অন্য আলুতে স্ক্যাব বা দাঁদ রোগ হয়ে থাকে। কিন্তু বিএডিসি আলু-১ (সাইনসাইন) স্ক্যাব প্রতিরোধী জাত হওয়ায় সানসাইন জাতের আলুতে স্ক্যাব হয় না। আলুর রং হয় সুন্দর।

পারেরটং গ্রামের চাষি নাজমুল হাসান জানান, তিনি গত বছরের নভেম্বর মাসে জমিতে বীজ আলু রোপন করেছেন। ৭০ শতাংশ সানসাইন আর ৩০ শতাংশ এলুয়েট জাতের বীজ আলু চাষ করেন। আলু তুলতে সময় লেগেছে ৬৫-৭০ দিন। ফলন খুব ভাল হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে প্রতি শতাংশে প্রায় ৪ মণ। খরচ বাদ দিয়ে তার ২ লাখ টাকা লাভ হবে। আগামী মৌসুমের আগে সরকার থেকে পানি সমস্যার সমাধান করে দিলে এলাকার অন্য কৃষকরা আলু চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশেনের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, অন্য আলুর আবাদ এ এলাকায় খুব একটা না থাকায় এই অঞ্চলে ভাইরাস ও রোগমুক্ত মানসন্মত আলু উৎপাদিত হবে। তাই আমরা কৃষকদের আলু চাষে উদ্বুদ্ধ করছি। তবে সেচের ব্যবস্থা এবং জমির মালিকানা সমস্যার সমাধান করা গেলে এ অঞ্চলে আলু চাষে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সকালের যে ৫ অভ্যাস রাতের ঘুম নষ্ট করে

আজ বেগম রোকেয়া দিবস

জাপানে ভূমিকম্পের সর্বশেষ অবস্থা

বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে ঢাকা

টানা ৪ দিন তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির ঘরে

দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের ব্যাপক বোমা হামলা

বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা, বাড়িতে আগুন-লুটপাট

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তার ‘গ্যারান্টি’ চান জেলেনস্কি

ঢাকায় শীতের আমেজ, কমছে তাপমাত্রা 

গরম না ঠান্ডা পানি? শীতে গোসলের আগে যেগুলো মাথায় রাখবেন

১০

অ্যাকাউন্টসে নিয়োগ দিচ্ছে ইজি ফ্যাশন

১১

এপিবিএন সদস্যের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

১২

বিলিং বিভাগ অফিসার নেবে আকিজ বশির গ্রুপ

১৩

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

১৪

মঙ্গলবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১৫

৯ ডিসেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৬

জাপানে সুনামির সব সতর্কতা প্রত্যাহার

১৭

ফ্ল্যাটে ঢুকে সাংবাদিককে পুলিশ কনস্টেবলের হাতুড়ি পেটা

১৮

জানা গেল আর্জেন্টিনার ফুটবলারকে লাথি মারা সেই ফুটবলারের পরিচয়

১৯

হামজাকে দলে পেতে মরিয়া বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাব

২০
X