যশোরের মনিরামপুরে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে ঘিরে সহকারী প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে শ্যামকুড় ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে।
শনিবার (৮ জুন) দুপুরে উপজেলার নাগোরঘোপ বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় ভয় পেয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক সন্তোষ কুমার পাল অসুস্থ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষকদের বাড়ি ফেরার সুযোগ করে দেন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ না করার জন্য হুমকি প্রদান করছেন চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন।
জানা গেছে, সম্প্রতি নাগোরঘোপ বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটি গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচনী তপশিল ঘোষণা করা হয়। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল আজ শনিবার। নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট শ্যামকুড় ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারমান আলমগীর হোসেন ও সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি পৃথক দুটি প্যানেলভুক্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
সহকারী প্রধান শিক্ষক সন্তোষ কুমার পাল বলেন, বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক অফিসিয়াল কাজে বাইরে ছিলেন। নির্বাচনী তপশিল ঘোষণার পর ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের লোকজন বিদ্যালয়ে এসে ভোটার তালিকা চান। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রধান শিক্ষকের হেফাজতে রয়েছে বলে জানাই। কিন্তু আমার কথা মানতে নারাজ ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন।
তিনি বলেন, অফিস কক্ষে ঢুকে ভোটার তালিকায় অসংগতি থাকার অভিযোগ তুলে অকথ্য ভাষায় গালাগালসহ চেয়ার তুলে মারতে উদ্যত হন তিনি। চেয়ারম্যানকে নিবৃত করতে গিয়ে সহকারী শিক্ষক গোলাম রসুলও লাঞ্ছিতের শিকার হন। এ সময় অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিতে থাকলে একপর্যায়ে খসড়া ভোটার তালিকা চেয়ারম্যানকে দিতে বাধ্য হই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ বলেন, এ ঘটনার আগেও গত ২২ নভেম্বর বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্যানারে নাম থাকায় চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে ব্যানার ছিঁড়ে ফেলাসহ চেয়ার ও সাইন্ড বক্স ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করে বিপাকে পড়তে হয়। এ কারণে সহকারী প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় অভিযোগ করিনি।
ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন লাঞ্ছিত করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ম্যানেজিং কমিটি গঠনের লক্ষ্যে অসংগতিপূর্ণ ভোটার তালিকা সরবারহ করা হয়েছে। এ নিয়ে কথাকাটাকাটি হয়েছে মাত্র। লাঞ্ছিত হওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। কাল আমি বিদ্যালয়ে যাব।
মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন কালবেলাকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন