মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের কটিয়ারকোনা গ্রামের উদনাছড়ার ওপর নির্মিত ব্রিজের নিচ থেকে অতিরিক্ত বালু উত্তোলন ও ভারী যান চলাচল করায় মাঝখান ভেঙে গেছে ব্রিজটির। এতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন ও সাধারণ মানুষজন।
এ ব্রিজ দিয়ে হুগলিয়া কমিউনিটি ক্লিনিক, চিমাইলত গ্রাম, হুগলিয়াছড়া চা বাগানবাসী, সিন্দুরখান ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় বাংলাদেশ বর্ডারগার্ড (বিজিবি) টহল দল এবং কুঞ্জবন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।
ব্রিজটি ছোট ছোট ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৪-১৫ সালে ৩১ লাখ ১৭ হাজার ৪৮২ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ব্রিজের মাঝখানে ভেঙে দেবে গেছে। ব্রিজের পিলারের কয়েকটি অংশ ভাঙা। স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্রিজের নিচ থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে বালু উত্তোলনের কারণে এবং এ পথে বালুবাহী ট্রাক চলাচল করায় এ অবস্থা হয়েছে।
জানতে চাইলে সিন্দুরখান ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. শাহিন মিয়া বলেন, ব্রিজটি ভেঙে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। এত অল্পদিনে দেবে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ করে বলেন, বছরের পর বছর ধরে ব্রিজের নিচ থেকে বালু উত্তোলন করে আসছে বালু ব্যবসায়ী একটি চক্র। নিচ থেকে অতিরিক্ত বালু উত্তোলনের কারণে এবং বালুবাহী ট্রাক চলাচল করায় অকালে ভেঙে পড়েছে এটি। আধা ভাঙা এ ব্রিজ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুর রহমান মুহিত বলেন, মাত্র ৬/৭ বছরের মধ্যে এ এটি ভেঙে দেবে গেছে। এতে ছিমাইলত, হুগলিয়া ছড়া, জাম্বুরা ছড়া ও সরকারেরগাঁও এর হাজার হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।
হুগলিয়া গ্রামের প্রবাসী হেলাল উদ্দিন বলেন, ব্রিজটি ভেঙে গিয়ে এখন চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। ব্রিজটি নির্মাণের সময় এর কাজ নিম্নমানের হয়েছে কি না বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। এ ব্রিজের ওপর দিয়ে একটি চা বাগান ও কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এখানে নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানাই।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াছিন আরাফাত রবিন বলেন, সম্প্রতি অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে ভেঙে পড়া এ ব্রিজ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে স্থানীয়রা চলাচল করছেন। এখানে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণ করার দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ব্রিজের বিষয়টি এখন জানতে পারলাম। ২/১ দিনের মধ্য পরিদর্শন করে এখানে একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু তালেব কালবেলাকে বলেন, সম্প্রতি পাহাড়ি ঢলে শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন রাস্তা-ঘাট ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্রিজটি পরিদর্শন করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন