দেখে মনে হতে পারে এটা কোনো টঙ দোকান কিন্তু না এটি একটি ঘর। যার মধ্যেই হানিফ মিয়াকে রান্নাবান্না খাওয়া দাওয়া সবকিছুই করতে হয়। ৮ ভাইবোনের সংসারে তিনি ছিলেন মেঝো ছেলে। বাবার ২৬ শতাংশ জমি ছিল, তাও বিক্রি করে দিতে হয় ধার দেনার জন্য। এরপর থেকে নদীর পাড়ে গড়ে তোলেন বসতঘর।
হানিফ মিয়ার বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটায়। কোথাও কোনো ঠাঁই না পেয়ে উপজেলার গহরপুর এলাকার বিষ খালি নদীর পারে ঘর তুলেন। নদীভাঙনে তার সেই ঘরটিও বিলীন হয়ে যাওয়ার পর এভাবে টঙ পেতে ১০ বছর পার করলেন হানিফ মিয়া।
দরিদ্র হানিফ মিয়া টাকার বিনিময়ে নদীতে মাছ ধরেন। সেখান থেকে পাওয়া খাওয়ার মাছ আর ১০০ টাকা দৈনিক মজুরিতে চলে তার সংসার। বয়সের ভারে এখন আর আগের মতো কাজও করতে পারেন না তিনি। একটু ঝড় হলেই নড়বড়ে এই টঙ পাতা ঘরটিও ভেঙে যায়।
হানিফ মিয়া জানান, নদীতে পোনা ধরেই জীবন চলে। তবে গত একমাস ধরে তেমন কোনো পোনা নেই। কেউ কাজে ডাকলে কিছু টাকা দেয়, কয়েকটা মাছ দেয়। এভাবে দিন কেটে যাচ্ছে।
হানিফ মিয়ার স্ত্রী বলেন, পোনা ধরার টাকায়ই চলে আমাদের সংসার। ১০ বছর ধরে টঙ পেতে বসবাস করছি।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুকুনুজ্জামান খান বলেন, হানিফ মিয়ার বিষয়ে তিনি অবগত। তার বাড়িও ঘুরে এসেছেন তিনি। কিন্তু তিনি এই ভিটেটুকু ছেড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পে যেতে চান না।
এলাকাবাসী জানান, হানিফ মিয়া খুবই দরিদ্র মানুষ। তার ঘর দেখলেই তা বোঝা যায়। তবে তিনি যদি আশ্রায়ণ প্রকল্পে যেতে না চান তাহলে এখানেই তাকে কোনোভাবে সাহায্য করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
মন্তব্য করুন