বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২৪, ০৫:৫৪ পিএম
আপডেট : ১৬ জুন ২০২৪, ০৬:১২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বগুড়ায় কোরবানির বাজারে বিদেশি চাকুর দাপট

বগুড়ায় চাকু দায়ের দোকান। ছবি : কালবেলা
বগুড়ায় চাকু দায়ের দোকান। ছবি : কালবেলা

আমদানি করা চাকু-দায়ের দাপটে এবার কামারের ঘরের চাকু-দায়ের কদর নেমে গেছে। ফলে কামারশালায় ঈদের আগের দিন পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত ব্যস্ততা নেই। দা-বঁটি শানানোর জন্য কাজও কমে গেছে। আর এ কারণে এবার দা-বঁটি চাকু শানানোর দর বেড়ে গেছে। প্রতিটি দা-বঁটি সানানোর জন্য সাইজ ভেদে ৭০ থেকে একশ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।

প্রতিবার ঈদুল আজহার আগে কোরবানিদাতারা ছোটেন কামার ঘরে। নিজেদের প্রয়োজনীয় ধারালো যন্ত্রপাতি শানিয়ে নেন। আবার কেউবা নতুন করে দা-বঁটি চাকু বানিয়ে নেন। চাকু-বঁটি দা বানানোর কাজেও এবার তেমন চাপ নেই বলে জানিয়েছেন কামাররা।

তাদের দাবি বাজারে আমদানি করা বিদেশি চাকুর প্রভাবে কামার ঘরের চাকুর কদর কমে গেছে। তাদের দাবি বিদেশি চাকুগুলো ওয়ানটাইম হওয়া সত্ত্বেও অনেকেই বিদেশি চাকু কেনেন। বিদেশি চাকুর ধার নষ্ট হয়ে গেলে আর দেওয়া যায় না। একারণে ওই চাকু পরবর্তীতে কেউ ব্যবহার করতে পারে না। পক্ষান্তরে দেশি চাকু বছরের পর বছর ব্যবহার করা হয়। যে কোনো সময় সানানো যায়।

শহরের খান্দার এলাকার রাজিব আহমেদ জানান, তিনি চামড়া ছাড়ানোর জন্য প্রতিবার ছোট বাকা চাকু কেনেন। ওই চাকু ধার ভালো কিন্তু একবারের বেশি ব্যবহার করা যায় না। এ কারণে দেশি চাকু ভালো কিন্তু ভালো মানের চাকু সব জায়গায় পাওয়া যায় না।

একইভাবে শহরের সূত্রাপুর এলাকার সামছুল আলম জানান, তিনি নিজের কোরবানির পশু নিজে জবাই করেন। চামড়া ছাড়ানা থেকে শুরু করে কাটা সব কাজ নিজে করেন সঙ্গে দুই একজন সহায়তা করেন। কয়েক বছর আগে জবাই করার চাকু বানিয়েছেন এক চাকু দিয়ে বহুদিন কাজ করা যায়। তাই প্রতিবছর কেনার প্রয়োজন হয় না। বেশি প্রয়োজন হলে চামড়া ছাড়ানোর জন্য একটা বা ২টা চাকু কেনেন তিনি।

বগুড়া শহরের উপশহর এলাকার ৭০ বছরের বৃদ্ধ হাসান আলীর সঙ্গে কথা হয় চাঁদনী বাজার এলাকায়। তিনি জানান, আগে প্রায় সব কোরবানিদাতা নিজের পশুর চামড়া নিজেরা ছাড়তেন। নিজেরাই গোস্ত কাটতেন। এখন কসাইয়ের উপর সবাই নির্ভারশীল হয়ে পড়েছে। একারণে এখন কামারের ঘরে তেমন ভিড় নেই। কসাইয়ের ওপর নির্ভরতা কমলে আবার কামারের ঘরে চাপ বাড়বে। শহরের বকশীবাজার এলাকার দুটি কামারশালা রয়েছে। কোনো কামারশালাতেই দগদগে আগুন নেই। হাঁপড়ের দড়িতে টান দিতে হচ্ছে না। তারা কেবল শানানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। বগুড়া শহরের চাঁদনী বাজার (কাঁঠালতলা) এলাকা এবং দুই নম্বর রেল ঘুমটি থেকে তিন নম্বর রেল ঘুমটি পর্যন্ত প্রায় ২ ডজন চাকু ও দায়ের দোকান রয়েছে।

তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমদানি করা ছোট চাকু বেশি বিক্রি হচ্ছে। একশ টাকার কমে কোনো চাকু নেই। বিদেশি চাকু বেশি বিক্রি হয়। দা বেশি বিক্রি হয় না। দেশি চাকু তেমন বিক্রি হয় না। যারা দেশি চাকু কিনতে আসেন তারা ছমিলের করাতের চাকু খোঁজেন।

এই চাকুগুলোর দাম একটু বেশি হলেও এর চাহিদা বেশি। এ ধরনের প্রতিটি চাকু ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়। অন্যান্য ছোট চাকু ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মুরাদনগরে বিষাক্ত স্পিরিট পানে ২ জনের মৃত্যু

প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

কুষ্টিয়ায় বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রাণ ভোমরারা হতাশ হয়েছেন : নুর

দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা

এবার চট্টগ্রামে সাংবাদিককে গলা টিপে হত্যাচেষ্টা

সাবেক ৩ গভর্নর ও ৬ ডেপুটি গভর্নরের ব্যাংক হিসাব তলব

এনসিপির হয়ে নির্বাচন করব কিনা সিদ্ধান্ত নেইনি : আসিফ মাহমুদ

সবাইকে টেস্ট খেলানো জরুরি নয় : জোরাজুরিতে দেউলিয়ার শঙ্কা

প্রবাসেও আপ বাংলাদেশের কমিটি ঘোষণা 

১০

ইসরায়েল পুড়ছে রেকর্ড তাপমাত্রায়

১১

শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনকে আর্থিক সহায়তার চেক দিল যমুনা অয়েল

১২

অসহায় পরিবারের দুই শিশুকে চিকিৎসা সহায়তা-অটোরিকশা দিলেন তারেক রহমান

১৩

৩০০ আসনে নির্বাচনের পরিকল্পনা করছে গণতন্ত্র মঞ্চ 

১৪

ড্রোন শো পরিচালনার প্রশিক্ষণে চীন যাচ্ছেন ১১ জন

১৫

সামাজিক কাজে অবদান রাখায় নিবন্ধন পেল প্রভাত

১৬

স্বাস্থ্যের ডিজির আশ্বাসে মন গলেনি, নতুন কর্মসূচি ছাত্র-জনতার

১৭

শহীদ মিনারে কাফনের কাপড় পরে বস্তিবাসীদের অবস্থান

১৮

পিআর পদ্ধতিতেই নির্বাচন হতে হবে : চরমোনাইর পীর

১৯

চট্টগ্রামে ১০ লাখ গাছ লাগানোর ঘোষণা মেয়রের

২০
X