ঢাকা মহানগর দায়রা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হিসেবে এহসানুল হক সমাজী নিয়োগ পাওয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়েছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। তাকে আওয়ামী লীগের দালাল আখ্যায়িত করে গতকাল বুধবার অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এছাড়াও পিপির কার্যালয়ে তালা লাগানোর ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসলিসিটর মাহরুফ হোসাইন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এহসানুল হক সমাজীকে নিয়োগ প্রদান করা হয়।
পরে বুধবার (২৮ আগস্ট) এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর দুপুরে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা সাধারণ আইনজীবীর ব্যানারে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সামনে নিয়োগ বাতিল চেয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
সেখানে অবিলম্বে এহসানুল হক সমাজীর নিয়োগ বাতিলের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানান। তা না হলে তাকে এ দায়িত্বপালন করতে দেওয়া হবে না মর্মে হুমকি প্রদান করেন।
তারা সমাজীকে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রেতাত্বা বলে অভিহিত করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সুবিধা দেওয়া জন্য নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন।
এ সমাবেশে ঢাকা আইনজীবী সমিতির বিএনপি দলীয় সাবেক সভাপতি বোরহান উদ্দিন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকীকে নের্তৃত্ব দিতে দেখা যায়।
বুধবার (২৮ আগস্ট) সকাল ৯টার মধ্যে পদত্যাগ না করলে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
এ বিষয়ে ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, সমাজী আওয়ামী লীগের দালাল, তার পরিবারের সবাই আওয়ামী লীগের। বারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে তিনি সহযোগিতা করেছেন। তার নিয়োগে আমরা ক্ষুব্ধ। ছাত্র জনতার আন্দোলনে যারা সহযোগিতা করেছে তাদের মধ্য থেকেই পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ করা হোক। তার নিয়োগ বাতিল নাহলে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি দেব।
তবে নবনিযুক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এহসানুল হক সমাজী বলেন, এটা সম্পূর্ণ সরকারের বিষয়। এখনো আমি কোন চিঠি পায়নি। এ বিষয়ে আপাতত কোন মন্তব্য করতে চাই না।
বিগত ওয়ান-ইলেভেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এহসানুল হক সমাজী ২ বছর ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটরের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাকে সরিয়ে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ পান অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু। তিনি দীর্ঘ ১৫ বছর দায়িত্বে ছিলেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আব্দুল্লাহ আবু আর আদালতেই আসেননি।
এহসানুল হক সমাজী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালের এলএলবি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৬ সালের ৩০ অক্টোবর একজন আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত হন।
ওই বছরের ৪ নভেম্বর তিনি ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্যপদ লাভ করেন। ১৯৮৮ সালের ৭ এপ্রিল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৯২ সালের ২১ জানুয়ারি তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্যপদ লাভ করেন।
মন্তব্য করুন