রাজধানীর মিরপুরে দিনের বেলায় মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীকে গুলি করে ২২ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় করা মামলায় ৫ আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আসামিরা হলেন মোস্তাফিজুর রহমান (৪০), সৈকত হোসেন দিপু মৃধা (৫২), মো. সোহাগ হাসান (৩৪), জলিল মোল্লা (৫২), পলাশ আহমেদ (২৬)।
বুধবার (১৮ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলামের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর বিভাগের উপপরিদর্শক নাজমুল হোসেন তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী আকবর হোসেন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, ফরোয়ার্ডিং এর দিকে তাকান মাননীয় আদালত। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের গ্রেপ্তারের টাইম দেখেন। ময়মনসিংহ ও আশুলিয়া থেকে একই টাইমে কীভাবে গ্রেফতার করা হলো? এছাড়া গত ১৫ তারিখ দীপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জলিল মোল্লা থেকে কোনো কিছু উদ্ধার হয়নি। পলাশ থেকে কিছু উদ্ধার দেখাতে পারেনি। রিমান্ডের ৬ নাম্বার আবেদনে জব্দকৃত জাল টাকা উদ্ধারের কথা বলা হয়েছে। এখানে জাল টাকা কোথা থেকে আসবে? মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুপার ম্যানের মতো একদিনেই সবাইকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু মামলাটা ভালোভাবে লিখতে পারেননি।
পরে বিচারক তদন্ত কর্মকর্তার উদ্দেশ্য বলেন, আইনজীবী যে কথা বলেছে, তার জবাব কীভাবে দিবেন? আশুলিয়া থেকে ময়মনসিংহ যেতে কতক্ষণ লাগে? একই সময়ে কীভাবে গ্রেফতার করলেন? কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা কোন জবাব দিতে পারেনি। শুনানি শেষে বিচারক ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ১৬ জুন পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় মোস্তাফিজুর রহমান কে তার বাসা থেকে ৩ লাখ টাকাসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। ১৬ জুন বরিশাল জেলার এর মুলাদী থানা পুলিশের সহায়তায় আসামি সৈকত হোসেন দিপু মৃধাকে ২ লাখ ৪ হাজার টাকা ও মোটর সাইকেলসহ তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ১৭ জুন যশোর জেলার কোতয়ালী থানা পুলিশের সহায়তায় আসামি মো. সোহাগ হাসান ভাড়া ঘর থেকে গ্রেপ্তার করে। আশুলিয়া ও ময়মনসিংহ থেকে জলিল ও পলাশ মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ২৭ মে মিরপুর-১০ নম্বরে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পেছনের গলিতে ডাকাতির এ ঘটনা ঘটে। ছিনতাইয়ের শিকার ব্যবসায়ীর নাম জাহিদুর রহমান। তিনি মিরপুর-১০ নম্বরে মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবসা করেন।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, মামলার ভুক্তভোগী রাসেলের মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরে মাহমুদ ফরেইন এক্সচেঞ্জ নামক প্রতিষ্ঠান আছে। ভুক্তভোগীর শ্যালক মামলার বাদী উক্ত প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করে। গত ২৭ মে সকাল সাড়ে ৯ টায় বাদী ও ভুক্তভোগী রাসেল একসঙ্গে ২১ লাখ ৭০ হাজার ৫৩৫ টাকা, ৩ হাজার ৫৫০ মার্কিন ডলার ও ১১ হাজার ৫০০ রিয়াল একটি ব্যাগে নিয়ে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। ৯ টা ৪০ মিনিটে মিরপুর মডেল থানাধীন সেকশন-২ শেরে বাংলা ন্যাশনাল স্টেডিয়াম ও ফায়ার সার্ভিসের মাঝের গলির মাথায় পৌছা মাত্রই তিনটি মোটরসাইকেল যোগে অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন ব্যক্তি তাদের পথরোধ করে এবং ০১জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বাদীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বাদীর হাতে থাকা টাকার ব্যাগ জোর করে ছিনিয়ে নেয়। তখন বাদীসহ তার শ্যালককে অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন ব্যক্তি প্রতিরোধ করে অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তি পিস্তল দিয়ে ফাঁকা গুলি করে এবং অন্য একজন ব্যক্তি ধারালো চাকু দিয়ে বাদীর কোমরের বাম পাশে আঘাত করে। পরবর্তীতে বাদী চিকিৎসা শেষে মিরপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
মন্তব্য করুন