অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হওয়ার প্রস্তাব দেওয়ার পেছনে কোনো ইন্ধন ছিল কিনা সে বিষয়ে আদালতে বক্তব্য দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেনের জেরার জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, ড. ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হওয়ার প্রস্তাব দেওয়ার পেছনে দেশি-বিদেশি শক্তির কোনো ইন্ধন ছিল না।
জেরার জবাবে ট্রাইব্যুনালে নাহিদ ইসলাম বলেন, ৩ আগস্ট সরকার পতনের এক দফা কর্মসূচি তাদের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার অংশ ছিল- এমন দাবি সত্য নয়। তাদের আন্দোলনের পেছনে দেশি-বিদেশি কোনো শক্তির সংশ্লিষ্টতা ছিল না এবং দেশি-বিদেশি প্ররোচনায় তারা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন- এমন অভিযোগও সত্য নয়।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ আপত্তি জানায়। প্রসিকিউশনের পক্ষে মো. মিজানুল ইসলাম বলেন, সরকার পরিবর্তনকে কোনোভাবে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। তখন ট্রাইব্যুনাল মন্তব্য করেন, এ বিষয়টি আলোচনার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক।
পরে জেরার জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট পদত্যাগ করেননি- এ দাবি সত্য নয়। একইভাবে, তিনি বাধ্য হয়ে ভারতে যাননি- এ কথাও সত্য নয়।
এর আগে, জবানবন্দিতে নাহিদ ইসলাম জানান, পূর্বপ্রস্তুতির অংশ হিসেবে তারা নতুন সরকার গঠনের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন এবং গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের আগেই তাকে নতুন সরকারের প্রধানের দায়িত্ব পালনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। পরে ওই মাসের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ শেষ হয়েছে।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলার বাকি দুই আসামি হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে এই মামলায় রাজসাক্ষী হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন