দেশের অর্থ লোপাটের সঙ্গে জড়িত প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী তাজবীর হাসানকে বিমানবন্দর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে রিমান্ড শুনানির জন্য ১৪ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
শনিবার (৪ অক্টোবর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাকিবুল হাসান এ আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাইয়ূম হোসেন নয়ন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, এ আসামি পিকে হালদারের সহযোগী। তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং, প্রতারণাসহ নানা অভিযোগ আছে। সেজন্য আজ ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার উপপরিদর্শক মো. সুমন মিয়া। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন এবং রিমান্ড শুনানির জন্য ১৪ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
এর আগে, শনিবার (৪ অক্টোবর) মধ্যরাতে আটকের পর দুপুরে ১২টার দিকে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা তাকে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, তুরস্কে যাওয়ার পথে তাজবির হাসানকে (৩৫) আটক করা হয়েছে। আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি তুরস্কসহ আরও একটি দেশের নাগরিকত্ব বা পাসপোর্ট গ্রহণ করেছেন। গোয়েন্দা তথ্য মতে, তিনি পিকে হালদারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। সেজন্য তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রিমান্ড আবেদন বলা হয়েছে, আসামির বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ থাকার কথা জানা যায়। সে পিকে হালদারের সঙ্গে বড় অঙ্কের টাকার ১০ শতাংশের শেয়ার হোল্ডার। এছাড়াও জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, পিকে হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারির সাথে তিনি ওতোপ্রোতভাবে জড়িত এবং একাধিক দেশের নাগরিক। সেজন্য আসামিকে ব্যাপক ও নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদসহ আরও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের জন্য সাত দিনের রিমান্ড প্রয়োজন। তার সঙ্গে থাকা ১টি টার্কিস পাসপোর্ট, ১টি আইফোন ১৭ প্রো-মেক্স, ১টি আইফোন ১৫ প্রোর আলামতগুলো ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে গ্রাহকদের শত শত কোটি টাকা নিয়ে হঠাৎই উধাও হয়ে যায় হালট্রিপ। ক্ষতিগ্রস্ত হয় অসংখ্য যাত্রী ও ট্রাভেল এজেন্সি। তবে জানুয়ারি ২০২০-এ দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও অন্তত দুটি দেশের (তুরস্ক ও ভানুয়াতু) নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন মোহাম্মদ তাজবীর হাসান। এছাড়াও তার মাল্টার রেসিডেনসি এবং স্পেনের গোল্ডেন ভিসা রয়েছে বলে দাবি করেছে কয়েকটি সূত্র।
সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাটের জন্য দেশের আর্থিক খাতে আলোচিত নাম প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার। তিনি একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও একটি ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা ছিলেন। আবার দেশের আর্থিক খাতের শীর্ষ দখলদার ও খেলাপিদের একজন।
মন্তব্য করুন