গণঅভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরায় ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিজিবি কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বুধবার (৮ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর রেজিস্ট্রারের কাছে প্রসিকিউশন পক্ষ থেকে অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ। পরে ট্রাইব্যুনাল-১ অভিযোগটি আমলে নিয়ে আনুষ্ঠানিক আদেশ দেন।
এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন—বিজিবির আরেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত বিন আলম মুন, ডিএমপির খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম এবং রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান।
এদিকে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গুম এবং র্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) ও জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেন্টার (জেআইসি)-এর সেলে বন্দি রেখে নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা দুই মামলা আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ মামলাগুলোতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে মোট ৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বুধবার (৮ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক বেঞ্চ অভিযোগ আমলে নেন। একই সঙ্গে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেওয়া হয়েছে।
শুনানি শেষে গুমের দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদসহ মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে।
এদিন সকালে আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে বিরোধী মতের ব্যক্তিদের গুম এবং র্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে বন্দি রেখে নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, দলীয় ক্যাডার এবং সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করার একাধিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছিল। বর্তমানে এসব অভিযোগের বিচারকাজ দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
মন্তব্য করুন