জেল-জরিমানার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেছেন মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলান। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিলটি দায়ের করা হয়। পাশাপাশি আদিলুর ও নাসিরের জামিন চেয়ে আবেদনের প্রস্তুতি চলছে।
আদিলুর-নাসিরের আইনজীবী মো. আহসানুজ্জামান ফাহিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আদিলুর ও নাসিরের জামিন চেয়ে আবেদন দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এক দশক আগের ঘটনায় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের (আইসিটি) ৫৭ ধারার মামলায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর আদিলুর ও নাসিরকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। রায়ের পর আদিলুর ও নাসিরকে কারাগারে পাঠানো হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম সমাবেশ করে। পরে সমাবেশস্থলে রাত যাপনের ঘোষণা দেন সংগঠনের নেতারা। তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিতে যৌথ অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ওই অভিযানে ৬১ জন নিহত হন বলে দাবি ছিল অধিকারের। তবে সরকারের ভাষ্য, সেই রাতের অভিযানে কেউ মারা যাননি। অভিযানের পর ২০১৩ সালের ১০ আগস্ট গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ডিবির তৎকালীন এসআই আশরাফুল ইসলাম। তদন্ত শেষে ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার আদালতে আদিলুর ও এলানের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়। এতে ৩২ জনকে সাক্ষী করা হয়। ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মামলাটি বিচারের জন্য অভিযোগ আমলে নেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২০১৪ সালে দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। বিচার চলাকালীন ২৮ সাক্ষীর মধ্যে ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। গত ২৪ আগস্ট যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ৭ সেপ্টেম্বর রায়ের দিন ধার্য করেন। তবে ওইদিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় আদালত ১৪ সেপ্টেম্বর রায়ের দিন ধার্য করেন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আদিলুর ও এলান ৬১ জনের মৃত্যুর ‘বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা’ তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি এবং প্রচার করে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অপচেষ্টা চালান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি দেশে-বিদেশে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেন। পাশাপাশি তারা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি করেন।
মন্তব্য করুন