বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনের বিরুদ্ধে বিদেশে বিনিয়োগ ও অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্তে হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিলের শুনানি করে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ হাইকোর্টের জারি করা রুল খারিজ করে এ আদেশ দিয়েছেন।
আদালতে এস আলম গ্রুপের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজমালুল হোসেন, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও আহসানুল করিম। আর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। এ ছাড়া হাইকোর্টে সুয়োমটো রুলের পক্ষে শুনানিকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। পরে ব্যারিস্টার সুমন সাংবাদিকদের বলেন, আজকের রায়ের ফলে হাইকোর্ট যে রুল জারি করেছিলেন তা খারিজ করে দিয়েছেন। এর ফলে হাইকোর্টের তদন্তের আদেশও বাতিল হয়ে গেছে। তবে চাইলে দুদক ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিলিজেন্স ইউনিটের (বিআইএফইউ) স্বাধীনভাবে তদন্তে কোনো বাধা থাকবে না।
সাইফুল আলম ও ফারজানা পারভীন সিঙ্গাপুরে কমপক্ষে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন বলে একটি জাতীয় দৈনিকে গত বছরের ৫ আগস্ট প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এস আলম গ্রুপ কখনোই বিদেশে বিনিয়োগ বা তহবিল স্থানান্তরের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নেয়নি।
প্রতিবেদনের বিষয়টি গত ৬ আগস্ট আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। পরে, এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে অর্থপাচার ঠেকাতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে গত বছরের ২১ আগস্ট সাইফুল আলম ও ফারজানা পারভীন তাদের আইনজীবীদের মাধ্যমে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। পরে ওই আবেদনের শুনানি করে গত বছরের ২৩ আগস্ট আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত হাইকোর্ট আদেশ স্থগিত করেন। এরপর হাইকোর্ট আদেশের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিলের ওপর আজ আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানি হয়। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ হাইকোর্ট রুল খারিজ করে আদেশ দেন।
মন্তব্য করুন