পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার এসএম শিবলী নোমান বরাবরই নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। ২০১৯ সালে ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলে তাকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে বদলি করা হয়। কোনো নিয়মের তোয়াক্কা করেননি সেখানেও। দুর্নীতি, ঘুষবাণিজ্য ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বনে গেছেন হাজার কোটি টাকার মালিক। গাজীপুরে ১০০ বিঘা জমিতে মেসার্স এনএ এগ্রো, গোপালগঞ্জে ৪০০ বিঘা জমিতে সর্দার এগ্রো এবং রাজধানীর খিলক্ষেতে অটো হ্যাভেন নামে গাড়ির শোরুমের মালিক শিবলী নোমান। এ ছাড়া আছে ডুপ্লেক্সসহ একাধিক বাড়ি ও ফ্ল্যাট। তার বিরুদ্ধে সোনা চোরাকারবারিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকারও অভিযোগ রয়েছে।
তিনি রমনা অঞ্চলের সহকারী কমিশনার (এসি) থাকাকালে ২০১৪ সালের ১৩ মার্চ রামপুরা থানার পুলিশ ২৩৫টি সোনার বারসহ একটি গাড়ি আটক করে। পরে সেখান থেকে ১৬৫টি বার আত্মসাৎ করে বাকিগুলো উদ্ধার দেখানো হয়। এ ঘটনা জানাজানির পর রামপুরা থানার তিন পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। থানার ওই সময়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালাকে প্রত্যাহার করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, চোরাচালানিদের সঙ্গে বরাবরই নোমানের যোগাযোগ ছিল।
মতিঝিল ক্লাবপাড়ায় ক্যাসিনো পরিচালনায় সহায়তা দিতেন শিবলী নোমান। বিনিময়ে কোটি টাকা ঘুষ নিতেন। ২০১৯ সালে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় ক্লাবগুলোতে জুয়া ও ক্যাসিনো পরিচালনায় মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার শিবলী নোমানের সম্পৃক্ততা পায় প্রশাসন। পরে তাকে মতিঝিল বিভাগ থেকে ডিবিতে বদলি করা হয়। এর ২৩ দিন পর পার্বত্য চট্টগ্রামের নবম আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয়। সেখানে গিয়েও তিনি থেমে থাকেননি। আইনের রক্ষক হয়ে তিনি নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। এমনকি মাদক বাণিজ্যেও জড়িয়ে পড়েন।
এসব অভিযোগ সম্পর্কে সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার এসএম শিবলী নোমান কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কোনো ধরনের ঘুষ ও অনিয়মের সঙ্গে আমি যুক্ত ছিলাম না। আমি ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় দেশের বাইরে ছিলাম। মতিঝিলে ক্যাসিনো চালিয়েছে নেপালিরা। এসব তথ্য আমি ঊর্ধ্বতন স্যারদের দিয়েছিলাম।
সোনা চোরাকারবারিদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। উল্টো চোরাকারবারিদের ধরতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছি।
মন্তব্য করুন