রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) জুলাই ৩৬ হলের ৯১ শিক্ষার্থীকে ‘বিনা পারিশ্রমিক যৌনকর্মী’ বলা সেই ছাত্রদল নেতা আনিসুর রহমান মিলনকে আজীবন বহিষ্কার করেছে শাখা ছাত্রদল।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) সকালে শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক নাফিউল ইসলাম জীবনের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে, মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট অন্য কারো নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন অভিযুক্ত এ নেতা। পরে তার সাংগঠনিক পদ স্থগিত করে সত্যতা যাচাই করার জন্য দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির সদস্য ছিলেন শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি শাকিলুর রহমান সোহাগ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক।
শাখা ছাত্রদল থেকে বলা হয়েছে, তদন্ত কমিটির সদস্যরা অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা আনিসুর রহমান মিলনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি সন্তোষজনক কোনো জবাব না দিয়ে ফোন বন্ধ করে দেন। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় তিনি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ইচ্ছাকৃতভাবে করেছেন। এ জন্য তাকে সহসভাপতির পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলাই ৩৬ হল এর প্রভোস্ট কর্তৃক ৯১ জন শিক্ষার্থীকে অযাচিতভাবে তলব করার প্রতিবাদে ছাত্রদলের সহসভাপতি ও শিক্ষার্থী জান্নাতুল নাঈমা তুহিনার ব্যক্তিগত ফেসবুক স্ট্যাটাসে শাহ মখদুম হলের সহসভাপতি এ আর মিলন খান কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল।
এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যদের পক্ষ থেকে এ আর মিলন খানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি সন্তোষজনক কোনো জবাব না দিয়ে ফোন বন্ধ করে দেন। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় তিনি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ইচ্ছাকৃতভাবে করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল এ আর মিলন খানকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ হল সহসভাপতির পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে সংগঠনের সব নেতাকর্মীকে নির্দেশ দেওয়া হলো তার সঙ্গে কোনোপ্রকার সাংগঠনিক কোনো যোগাযোগ না রাখার জন্য।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট আহ্বান জানানো হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন ও শৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী ও সাধারণ সম্পাদক সরদার জহুরুল ইসলাম এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
রাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, আমরা সবসময় নারীদের অধিকার আদায়ে ও তাদের সম্মানে বদ্ধপরিকর। নারীদের বুলিংয়ের বিষয়ে ছাত্রদল জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে। নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন হল কমিটির এক নেতা। এটা নিয়ে তার আমরা তার পদ সাময়িক স্থগিত করি এবং দলের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তিনি আরও বলেন, তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি অজুহাত দেখান এবং ফোন কেটে দেন। এতে প্রমাণিত হয় তিনি দোষী। তাই তদন্ত প্রতিবেদনের সিদ্ধান্তে তাকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রশাসনের কাছে আমরা আবেদন করেছি যাতে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা করা হয়।
মন্তব্য করুন