ছাত্রাবাস থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টায় নগরীর বিনোদপুর এলাকার এমএ স্টুডেন্ট প্যালেস থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় তার পড়ার টেবিল থেকে একটি চিরকুটও উদ্ধার করা হয়।
নিহত তানভীর ইসলাম রিতু বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি নীলফামারী সদর থানার কাঞ্চনহাট গ্রামে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
চিরকুটে লেখা ছিল, ‘প্রিয় বাবা-মা, আপনাদের অনেক ভালোবাসি। জানি না কোথায় কমতি ছিল। আম্মুর জন্য বেশি খারাপ লাগছে। আমাদের ফ্যামিলিটায় আম্মুর অবদানটাই আমি বেশি মনে করি। কথাটা বলার অনেক কারণ সেগুলো হয়তো আব্বু জানে। তোমাদের জন্য কিছুই করতে তো পারলাম-ই না, উল্টো ফ্যামিলিটাই শেষ করলাম। ছোট বোনটার কথা আর বললাম না, কান্না পাচ্ছে।’
এতে আরও লেখা ছিল, ‘দিনের পর দিন আপনাদের ঠকাই গেছি। এসব আপনারা জানতে পারলে হয়তো ভেতর থেকেই মরে যেতেন। সব সময় ভয়ে ভয়েই থাকতাম। গলা দিয়ে খাবার নামত না। বেশি বাড়াব না আর, যে হারায় সেই হারানোর যন্ত্রণাটা বোঝে, আর কেউ না। শেষ করলাম সবকিছু! এসব কিছু থেকে বাঁচার জন্যই এই সিদ্ধান্ত, আর কোনো উপায় ছিল না আমার কাছে। শেষমেশ একাকিত্বই আমাকে গিলে খেল। মনের শক্তি ফুরিয়ে এলে দেহের শক্তি যতই থাক, সম্ভব না বাঁচা। যদিও ক্ষমার যোগ্য না আমি, পারলে ক্ষমা করে দিয়েন। আপনাদের অযোগ্য সন্তান।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, বিকেল থেকেই তানভীর তার রুমের দরজা বন্ধ করে ভেতরে ছিল। পরে রাত ১১টার দিকে তার আত্মহত্যার খবর পাই। পুলিশ গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে৷ বাকিটা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।
লাশ উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ প্রমুখ।
মন্তব্য করুন