সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) ২০২৩-২৪ আন্তঃহল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট বর্জন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি হলের কেন্দ্রীয় দলের খেলোয়াড়রা।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় শাহ পরাণ (র.) হল বনাম শাহ এম এস কিবরিয়া হলের মধ্যকার উদ্বোধনী ম্যাচটি মাঠে গড়ানোর কথা থাকলেও দুটি দলই নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও মাঠে অনুপস্থিত থাকে। কোনো দলের উপস্তিতি না থাকায় ন পরিত্যক্ত হয় ম্যাচটি।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় আন্তঃহল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২৩-২৪ আয়োজক কমিটির সদস্যরা মাঠে অবস্থান করলেও আসতে দেখা যায়নি কোনো দলের খেলোয়াড়দের। পরবর্তীতে দুপুর ২টায় হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী হল বনাম আব্দুস সামাদ আজাদ হলের মধ্যকার দ্বিতীয় ম্যাচ মাঠে গড়ানোর কথা থাকলেও উভয় দলের অনুপস্থিতিতে এই ম্যাচটিও মাঠে গড়ায়নি।
এ ব্যাপারে সিকৃবি আন্তঃহল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২৩-২৪ এর কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি ড. আবু জাফর বেপারীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুস সামাদ আজাদ হলের এক খেলোয়াড় জানান, প্রথমত অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যার জন্য আমরা ভালোভাবে প্রস্তুতির সুযোগ পাইনি। তারা সম্ভবত তড়িঘড়ি করে দায়সারাভাবে টুর্নামেন্টটি আয়োজন করে ফেলতে চেয়েছে। দ্বিতীয়ত এই মাঠের অবস্থা খুবই খারাপ। মাঠের পাশেই পার্শ্বরাস্তা তৈরির সংস্কার কাজ চলছে। এবং মাঠটিও ক্রিকেট খেলার জন্য যথেষ্ট না। এমন জায়গায় ক্রিকেট ম্যাচ খেললে খেলোয়াড়রা যে কোনো ধরণের ইনজুরিতে পড়তে পারে। এমন অবস্থায় টুর্নামেন্ট বর্জন করা ছাড়া আমাদের কিছু করার নেই।
তবে খেলোয়াড়দের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে শাহ এম এস হলের প্রভোস্ট ড. মো. সাদ উদ্দিন মাহফুজ বলেন, আমরা খেলোয়াড়দের জন্য সকল সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করেছি। তবে তারা কেনো মাঠে আসেনি এই বিষয়টি আমাদের কাছে বোধগম্য না। তাদের খেলায় অংশগ্রহণ না করার পিছনে কি কারণ রয়েছে তা আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করবো।
খেলোয়াড়দের টুর্নামেন্ট বর্জনের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহ এ. এম এস কিবরিয়া হলের খেলোয়াড় সঞ্চয় বলেন, ক্রিকেট খেলার মত যে রকম মাঠ দরকার, তা আসলে আমাদের ক্যাম্পাসে নাই। আর যে মাঠটা খেলার জন্য বরাদ্দ ছিল সেটার চারদিকে ড্রেন ও রাস্তা বানিয়ে সংকীর্ণ করে ফেলেছে। পিচের অবস্থা মোটেও খেলার মতো না। বল ঠিকমতো পড়ে না, এমনকি মাঠে অনেক ছোট ছোট ইট-পাথর রয়েছে যা খেলা জন্য আসলে অনুপযোগী।
মাঠে খেলা না গড়ানোর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আতিকুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন অত্যন্ত আন্তরিকতার সহিত চেয়েছে টুর্নামেন্টটি শুরু হোক। গতকাল পর্যন্তও খেলোয়াড়রা বলেছে তারা খেলবে। হুট করে একরাতের মধ্যে তারা কেনো তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলো তা আসলে আমাদের জানা নেই। এইটা যেমন সত্য যে আমাদের মাঠটা একটি ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজনের জন্য পর্যাপ্ত বড় না এইটাও সত্য যে অন্যান্য যেকোনো সময়ের থেকে এইবারে মাঠের পিচ এবং আউটফিল্ড আরও ভালোভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। তবুও তাদের মাঠে না আসার বিষয়টা আমাদের কাছে পরিষ্কার না।
খেলোয়াড়দের এমন সকল অভিযোগ এনে খেলায় অংশগ্রহণ না করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজক কমিটির তাদের (খেলোয়াড়দের) মাঠে উপস্তিত না হওয়ার কারণ বুঝতে না পারার দোলাচলে টুর্নামেন্টটি মাঠে গড়ানো নিয়ে দেখা দিয়েছে ব্যাপাক অনিশ্চয়তা।
মন্তব্য করুন