পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একটু বাতাস হলেই থাকে না বিদ্যুৎ। শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই এমনটা হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
সোমবার (২৭ মে) ঘূর্ণিঝড় রিমাল পটুয়াখালী জেলাসহ বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলায় আঘাত হানে। অথচ পবিপ্রবি ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হলগুলো বিদ্যুৎ সরবরাহ রোববার রাত থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে পবিপ্রবি ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হলগুলো অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
পবিপ্রবিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য জেনারেটর রয়েছে। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলেও ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হলগুলোতে জেনারেটর চালিত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় না। অথচ প্রতিটি শিক্ষার্থী জেনারেটর বিল বাবদ ১৫০ টাকা ফি প্রদান করে থাকেন। ফি দিলেও বছরের পর বছর শিক্ষার্থীরা জেনারেটরের সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যে জেনারেটর ও বিদ্যুৎ সরবরাহের কেবল রয়েছে তা কৃষি কলেজ আমলের। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরে কোনো জেনারেটর স্থাপন করা হয়নি।
দুর্যোগ পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ে বিদ্যুৎ না থাকায় পবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা, গোসল, খাওয়া-দাওয়া সবকিছুতেই চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। আবাসিক হলগুলোতে দেখা দেয় পানি সংকট। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে জেনারেটর থাকার পরেও শিক্ষার্থীদের এমন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে কেন প্রশ্ন হাজারো শিক্ষার্থীর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, রোববার রাত আনুমানিক ২টার পর থেকে হলে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে হলের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর গোসল এবং খাওয়া-দাওয়ায় বেগ পোহাতে হয়েছে। অনেকে বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে খেয়েছেন। এমন ভয়াবহ দুর্যোগে যখন দেশজুড়ে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল সেখানে পবিপ্রবি প্রশাসন ছিলেন নীরব দর্শকের মতো।
শিক্ষার্থী মাহমুব আলম জয় বলেন, আমার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। বিদ্যুৎ না থাকায় খাওয়া-দাওয়া ও পড়ালেখা থেকে শুরু সবকিছুই বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়াও আমরা একটু বাতাস বা বৃষ্টিতেই বিদুৎহীন হয়ে পড়ি। এই ছোট্ট একটি ক্যাম্পাসে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে প্রশাসন বৈদুতিক লাইনগুলোকে সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করতে এখনো কোনো উদ্যোগ নেননি। যা খুবই দুঃখজনক।
বিদ্যুৎ বা জেনারেটরের সরবরাহের জন্য শিক্ষার্থীরা প্রতি হলে নিজস্ব জেনারেটরের দাবি জানিয়ে বলেন, আমরা শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর প্রায় ১০ লাখ টাকা জেনারেটরের ফি দেওয়া সত্ত্বেও জেনারেটর সুবিধা পাচ্ছি না। বিদ্যুৎ না থাকায় বাথরুমে পানি নাই, শিক্ষার্থীরা সারা রাত অন্ধকারে ছিল। ৷ আমাদের ফি দিতে একদিন দেরি হলে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয় না। কিন্তু দুইদিন ধরে জেনারেটর চালানো হচ্ছে না, অনেক অনুষদের পরীক্ষা চলছে। জেনারেটর না চালাতে পারলে ফি নেওয়া বন্ধ করুক।
প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মো. ইউনুস শরীফ বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্ব যে রয়েছে তার সঙ্গে কথা বললে ভলো হবে। দায়িত্বে কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জেনারেটর পরিচালনার জন্য একটা কমিটি রয়েছে। তারা জেনারেটরের সকল কিছু পরিচালনা করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (আ.দ.) ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, প্রয়োজনীয় মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নতুন ১১ কেবি ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর কেনার জন্য টেন্ডার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন