মূকাভিনয় প্রযোজনা ‘সুবোধ পালাবে না আর’ নিয়ে আফ্রিকার দেশ মরক্কো যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিশীল মূকাভিনয় সংগঠন ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশন। আগামী ২৪-২৯ জুলাই মরক্কোর প্রাচীন ও ঐতিহাসিক শহর কাসাব্লাঙ্কায় অবস্থিত ২য় হাসান ইউনিভার্সিটির ৩৫তম নাট্যোৎসবে অংশ নিচ্ছেন তারা। এর আগে দেশে-বিদেশে সাত শতাধিক প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন সংগঠনটির শিল্পীরা।
জানা যায়, অস্বীকৃতি, চেয়ার : দ্য সাইন অব পাওয়ার, ভালোবাসা এবং অতঃপর, সুবোধ পালাবে না আর- এই চারটি স্কেচ নিয়ে ৪০ মিনিটের প্রযোজনাটি মূলত ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশন এবং ইনস্টিটিউট অব মাইম অ্যান্ড মুভমেন্টের সমন্বয়। রচনা ও নির্দেশনায় আছেন মীর লোকমান ও শাহরিয়ার শাওন। অভিনয় করবেন মৌসুমী মৌ, সোহান, শাহরিয়ার শাওন এবং মীর লোকমান। আবহ সংগীতে আছেন, এই ট্যুরের নেতৃত্বদানকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শান্তা তাওহিদা এবং আলোক প্রক্ষেপণে আছেন এনামুল হক খন্দকার। বাংলাদেশ, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, মরক্কো, তিউনেশিয়া সৌদি আরবের শিল্পীরা অংশ নিচ্ছেন এবারের আয়োজনে।
সামাজিক, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বর্তমান পৃথিবীর বাস্তবতা এই প্রযোজনার অন্তর্গত বিষয়। চারটি স্কেচের প্রথমটিতে হত্যা, ধর্ষণ ও নারীর প্রতি বর্বরতার কালো অধ্যায় মূর্ত হয় নিঃশব্দে। একটি সুন্দর পৃথিবী বানাবার নির্বাক তাগিদ ভেসে ওঠে পরিচয়হীন শিশুর কান্নায়। দ্বিতীয়টি স্কেচটি ক্ষমতার প্রতীক চেয়ারকে কেন্দ্র করে। তৃতীয়টি আধুনিক প্রেম-বাস্তবতা নিয়ে। এটি হাস্যরসযুক্ত গল্প। শেষ গল্পটি বাংলাদেশের বহুল আলোচিত সুবোধ চরিত্র নিয়ে। প্রচলিত অন্ধকারে যে আলোর মশাল উঁচিয়ে ধরে, মুক্ত করে শান্তি ও স্বাধীনতার প্রতীক সাদা পায়রাকে।
এই প্রযোজনায় বহুল চর্চিত ট্র্যাডিশনাল রীতির বাইরে গিয়ে প্রপস-সেটের সহযোগে উত্তরাধুনিক মাইমকে দর্শকদের সামনে আনার চেষ্টা করা হয়েছে। শিল্পীদের মতে, এ প্রযোজনার স্কেচগুলো আমরা বহুবার দেশ-বিদেশের মঞ্চে প্রদর্শনী করেছি। মূকাভিনয়ের শক্তিতে একটি অন্যরকম শিল্পীত বাংলাদেশকে তুলে ধরব আমরা আফ্রিকার বুকে।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ‘না বলা কথাগুলো না বলেই হোক বলা’ স্লোগান নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশন (ডুমা)। ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মূকাভিনয় শিক্ষার একাডেমিক প্ল্যাটফর্ম ইনস্টিটিউট অব মাইম অ্যান্ড মুভমেন্ট (আইএমএম)। এ সফরটি মূলত এই দুটি সংগঠনের সম্মিলিত প্রচেষ্টা। ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও আর্মেনিয়ায় তারা মূকাভিনয় প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন নানা সময়ে।
মন্তব্য করুন