সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২
সুরঞ্জিত নাগ, ফেনী
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৩৮ এএম
অনলাইন সংস্করণ

বিদ্যালয়ে কোনোরকম উচ্ছৃঙ্খলতা ছিল না

সাবেক সিনিয়র শিক্ষক ও কবি ওবায়েদ মজুমদার। ছবি : কালবেলা
সাবেক সিনিয়র শিক্ষক ও কবি ওবায়েদ মজুমদার। ছবি : কালবেলা

শিক্ষাকে বলা হয় জাতির মেরুদণ্ড। এ শিক্ষা যারা দান করেন, তাদের বলা হয় শিক্ষাগুরু। একটি জাতির মেরুদণ্ড দৃঢ় ও সোজা রাখতে হলে শিক্ষাগুরুর সম্মান ও মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখতে হবে। পৃথিবীতে যত পেশা আছে, তার মধ্যে শিক্ষকতাকে সর্বোচ্চ মর্যাদার চোখে দেখা হয়। শিক্ষকদের সম্মান করা শিক্ষার একটি অংশ।

ফেনীর গিরিশ অক্ষয় একাডেমির সাবেক সিনিয়র শিক্ষক হিরা লাল চক্রবর্তী বলেন, শিক্ষাটা বর্তমানে বাণিজ্যিকে পরিণত হয়েছে। আমরা ঘর থেকে বের হলেই দেখি বিভিন্ন পাড়ায় কিন্ডারগার্টেন, হাই স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিটি বাড়িতেই ঝুলছে প্রতিষ্ঠানের নামে-বেনামে মানহীন প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডগুলো।

সাবেক সিনিয়র শিক্ষক ও কবি ওবায়েদ মজুমদার বলেন, আগের শিক্ষা ব্যবস্থায় ছিল সম্মান। বিদ্যালয়ে কোনোরকম ছিল না উচ্ছৃঙ্খলতা। ছিল না কোনো কমিটি নিয়ে বিরোধ।। বিরতি ছাড়া কোনো প্রকার ছাত্রছাত্রীদের স্কুলের বাইরে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। শিক্ষার মান সম্পূর্ণরূপে অভিভাবকদের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল। ছাত্রছাত্রীদের শাসন করলে কোনো অভিভাবকের কাছে অসন্তোষ ছিল না। অবশ্যই বেত নিয়ে শিক্ষকরা ক্লাসে যেতেন এবং যদি প্রয়োজন মনে করতেন, তাহলে শাসন করতেন। সরকারি কারিকুলাম অবশ্যই শিক্ষকরা মেনে চলতেন। তা ছাড়া কোনো শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বাইরে প্রাইভেট পড়ানোর কোনো সুযোগ ছিল না। প্রতিটি ক্লাসের নির্দিষ্ট সময়ে শিক্ষক ক্লাস রুমে হাজির থাকতেন।

ফেনীর জয়নাল হাজারী কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের প্রভাষক আনোয়ারা বেগম বিশ্ব শিক্ষক দিবসে সব শিক্ষককে হার্দিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, পুঁথিগত শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মাঝে মূল্যবোধ ও নৈতিকতা সৃষ্টি করে দক্ষ মানবসম্পদ বিনির্মাণে শিক্ষকদের ভূমিকা অপরিসীম। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পবিত্র সেতুবন্ধন থাকা অত্যন্ত জরুরি।

বখতার মুন্সী মোয়াজ্জেম হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সহকারী শিক্ষক আবদুল হক বলেন, শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। এই চিন্তা থেকে শিক্ষকতা পেশা বেছে নিয়েছিলাম। দীর্ঘ ৩৫ বছরের শিক্ষকতা জীবন শেষে অবসরে যাই। এই সময়টায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নানা স্মৃতি জড়িয়ে আছে। এখনকার সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। শিক্ষকরা জড়িয়ে যাচ্ছেন নানা অনিয়মে। তাদের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। অথচ ২০০৫ সালের আগে আমাদের সময় শিক্ষক বদলি হয়ে এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে যেতে শিক্ষার্থীদের সে কি কান্না।

সোনাগাজীর দারোগারহাট আল জামেয়াতুদ দ্বীনিয়া আলিম মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এখনকার বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। প্রতিষ্ঠান প্রধান অনিয়মে জড়িয়ে গেলে তখন সে প্রতিষ্ঠানের অন্য শিক্ষকরাও আর ভালোভাবে পাঠদান করাতে পারেন না। ওই প্রতিষ্ঠানে তৈরি হয় দলাদলি, গ্রুপিং। এসব কারণে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে পড়াশোনার অবস্থা খারাপ। শিক্ষকদের গ্রুপিংয়ের প্রভাব পড়ে ক্লাসে। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ভালোভাবে না পড়িয়ে ব্যস্ত থাকেন প্রাইভেট পড়ানো নিয়ে।

ফেনীর ছাগলনাইয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমানে চাঁদগাজী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক মো. ইমাম হোসেন বলেন, আমাদের সময় আমরা দেখেছি ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক ছিল অনেক গভীরে। শিক্ষক যেমন শাসন করত, ঠিক তেমনি ছাত্রদের জন্য ওনাদের ভালোবাসাও ছিল সীমাহীন।

জয়নাল হাজারী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ব্যবসায় বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাইফ উদ্দিন বলেন, কখনো শিক্ষকদের ঋণ শোধ করা যায় না।

ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজ অ্যান্ড ক্যাম্পাস স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অদ্রিতা নাগ বলে, শিক্ষকরা সমাজের বিবেক ও স্পন্দন। শিক্ষকরা আমাদের দ্বিতীয় অভিভাবক। পরিবারের পর শিক্ষকই হচ্ছেন আমাদের আশ্রয়স্থল। তাদের সান্নিধ্যে আমরা দীর্ঘ ছাত্রজীবন অতিক্রম করি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিদেশি পিস্তলসহ সন্ত্রাসী রয়েল আটক

কেবিনে নেওয়া হয়েছে ফরিদা পারভীনকে

চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

রেস্ট হাউসে নারীকাণ্ডের সেই ওসি প্রত্যাহার

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা / শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে আদেশের দিন ধার্য

নতুন প্রধান নির্বাহী পেল আইসিসি

রাফাল নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের বিস্ফোরক মন্তব্য

তিন বিভাগে অতি ভারি বর্ষণ, পাহাড়ধসের শঙ্কা

ব্রাজিলের সহকারী কোচের পদ ছাড়ছেন আনচেলত্তির ছেলে

ফিলিস্তিনপন্থি গ্রুপকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন টিউলিপ

১০

মেসিকে ধরে রাখতে তার ‘বডিগার্ড’কে দলে নিতে চায় মায়ামি!

১১

নির্বাচন হলে দেশ সঠিক পথে এগোবে : মির্জা ফখরুল

১২

এসএসসির ফল প্রকাশের তারিখ ঘোষণা

১৩

আল জাজিরার বিশ্লেষণ / ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব, গাজায় যুদ্ধ কি থামবে?

১৪

এবার আরেক মামলায় ২ দিনের রিমান্ডে আনিসুল হক

১৫

মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে মুখ খুললেন ট্রাম্প

১৬

শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ফের অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ

১৭

হজরত শাহজালাল (র.)-এর মাজার জিয়ারত করলেন মির্জা ফখরুল

১৮

এজবাস্টনে পরিসংখ্যানেই লেখা ভারতের রেকর্ডের গল্প

১৯

কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের দুঃসংবাদ দিল ইউটিউব

২০
X