কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ মে ২০২৫, ১২:৩৪ পিএম
আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ০১:৩০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

এপ্রিল মাসের বেতন পাননি পৌনে ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

মে মাস প্রায় শেষের পথে, অথচ এখনো এপ্রিল মাসের বেতন পাননি দেশের প্রায় পৌনে পাঁচ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারী। অভিযোগ উঠেছে, শুধুমাত্র একটি বিভাগের এক কর্মকর্তার অসুস্থতার কারণে পুরো ব্যবস্থাটি থমকে গেছে। এমন অবস্থায় বেতন না পেয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার কর্মী।

জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) আওতায় থাকা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রক্রিয়া করে থাকে এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (ইএমআইএস) সেল। এই সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট খন্দকার আজিজুর রহমান বর্তমানে অসুস্থ। তার বিকল্প কেউ না থাকায় গত মাসের বেতন বিল তৈরি কার্যক্রম পুরোপুরি থেমে আছে।

একাধিক সূত্র জানায়, শিক্ষকরা এখন তাদের ড্যাশবোর্ডেও প্রয়োজনীয় তথ্য দেখতে পাচ্ছেন না। অনেকে সন্দেহ করছেন, এটি হয়তো বড় কোনো প্রশাসনিক সংকট ঢাকার প্রচেষ্টা। যদিও ইএমআইএস সেলের প্রোগ্রামার মো. জহির উদ্দিন জানান, ‘কাজ এখনও শেষ হয়নি। তবে দ্রুতই শেষ হবে।’

তবে কর্মকর্তাদের দাবি, কাজ শেষ হলেও ব্যাংকে বেতন পৌঁছাতে আরও চার-পাঁচ দিন সময় লাগবে। এ হিসেবে মে মাসের শেষ সপ্তাহের আগে এপ্রিলের বেতন হাতে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

এদিকে শিক্ষক নেতারা বলছেন, একজন কর্মকর্তার অসুস্থতার জন্য পুরো ব্যবস্থাপনা বন্ধ হয়ে যাওয়া অগ্রহণযোগ্য। তারা অভিযোগ করেন, দেশে অসংখ্য আইটি বিশেষজ্ঞ থাকা সত্ত্বেও বিকল্প জনবল নিয়োগে উদাসীনতা প্রমাণ করে, এটি শুধু অব্যবস্থাপনা নয়; বরং এটি অবহেলা এবং ষড়যন্ত্রের অংশ।

শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর ভাগ্য একজন কর্মকর্তার স্বাস্থ্যগত অবস্থার ওপর নির্ভর করতে পারে না। এটি শিক্ষকদের প্রতি চরম বৈষম্য এবং পরিকল্পিত বঞ্চনা।

তিনি আরও বলেন, ঈদুল আজহার আগে পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতাসহ মে মাসের বেতন না দেওয়ার জন্য প্রশাসনিকভাবে জটিলতা তৈরি করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে ইএফটি (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার) পদ্ধতিতে বেতন প্রদান শুরু হয়েছে। জানুয়ারি থেকে প্রায় ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক এই ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, পরে ধাপে ধাপে আরও দেড় লাখ যুক্ত হন। তবে এনআইডি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, জন্মতারিখ বা নামের বানানগত ত্রুটির কারণে অনেকেই এখনো এ ব্যবস্থার বাইরে রয়ে গেছেন, ফলে তাদের বেতন স্থগিত আছে।

বেসরকারি শিক্ষকরা অভিযোগ করছেন, সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিয়মিত বেতন পেলেও, তাদের বারবারই অবহেলার শিকার হতে হচ্ছে। এমন বৈষম্যের নিরসনে জাতীয়করণের দাবি আবারও জোরদার হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার (২০ মে) সকালে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আজাদ খান এবং পরিচালক (মাধ্যমিক) কে এম এ এম সোহেলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তাদের কাউকেই পাওয়া যায়নি। এমনকি খুদেবার্তা পাঠানো হলেও তারা কোনো সাড়া দেননি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের ব্যাখ্যা দিল রাজউক

আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি, অবস্থান কর্মসূচিতে এনবিআরের কর্মকর্তারা

খালেদা জিয়ার সঙ্গে রাষ্ট্রদূত মুশফিকের সাক্ষাৎ

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ চিরতরে বাতিলের আহ্বান টিআইবির

অসময়ে জ্বলল বসুন্ধরা কিংস

নার্সিং ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হলেন ময়মনসিংহের মৌমিতা

গাজীপুর বিএনপির সব ইউনিটের কমিটি বিলুপ্ত 

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক এনসিপির 

প্রো-কাবাডি নিলামে বাংলাদেশের ১০ জন

বগুড়ায় এক সঙ্গে তিন থানার ওসি রদবদল

১০

সেমিনারে বক্তারা / জিওটেক্সটাইলের গবেষণা ও উৎপাদন বাড়াতে হবে

১১

বয়সভিত্তিক সাঁতারে নেই সেই আনসার!

১২

ভুয়া পণ্য প্রচারের দায়ে গ্রেপ্তার বিউটি কুইন

১৩

পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে যেভাবে সহায়তা করল ভারত

১৪

বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা বুধবার

১৫

এআই বিড়ম্বনায় হানিফ সংকেত

১৬

ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার অভিযানে সাগর-হিমেল

১৭

চলতি মৌসুমে ৬০ হাজার টন আম সংগ্রহ করবে প্রাণ

১৮

ব্রাজিলের হয়ে এক ঐতিহাসিক অভিশাপ ভাঙার মিশনে আনচেলত্তি

১৯

বড় ভাইয়ের জন্মদিনে গলায় বেলুন আটকে শিশুর মৃত্যু

২০
X