কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৪, ০৯:০৬ পিএম
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৪, ০৯:০৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধন চায় মালিকরা

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির লোগো। ছবি : সংগৃহীত
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির লোগো। ছবি : সংগৃহীত

দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাদের আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ কর দিতে হবে বলে সম্প্রতি রায় দিয়েছে আপিল বিভাগ। তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মালিকপক্ষ মনে করছেন, ট্রাস্ট আইনে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানকে আয়করের আওতায় নিয়ে আসার বিষয়টি আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সে কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ এর সংশোধনী চেয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি (এপিইউবি)। রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে এক চিঠির মাধ্যমে আবেদন করে দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ চেয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি (এপিইউবি)।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন স্বাক্ষরিত ওই চিঠি গত ৩ মার্চ পাঠানো হয় রাষ্ট্রপতি বরাবর।

চিঠিতে বলা হয়, সম্প্রতি অলাভজনক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর দেওয়া সংক্রান্ত ২০২১ সালে দায়ের করা রিট আপিলের নিষ্পত্তি হয়েছে। তবে ট্রাস্ট পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের ওপর করারোপের সিদ্ধান্তটি আইনগতভাবে সাংঘর্ষিক। কারণ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০’ মোতাবেক ট্রাস্ট গঠনের মাধ্যমে অলাভজনক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হয়ে আসছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর ৪৪(৭) ধারায় ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিলের অর্থ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় ব্যয় ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যয় করা যাইবে না’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আয়কর দেওয়ার নির্দেশনা বিশ্ববিদ্যালয়কে উভয় সংকটে ফেলবে। কেননা, প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় তহবিলের কোনো অর্থ যেমন উদ্যোক্তা-প্রতিষ্ঠাতারা নিতে পারেন না, তেমনি আয়কর হিসেবে দেওয়া বা অন্যভাবে ব্যয় করার বিষয়টিও সরাসরি আইনের লঙ্ঘন হিসেবেই প্রতীয়মান।

দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০’ এর আওতায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক ট্রাস্ট গঠনের মাধ্যমে সকল প্রকার বিধিবিধান মেনে পরিচালিত জানিয়ে চিঠিতে সংগঠনটি বলেছে, এক্ষেত্রে ট্রাস্ট আইনে পরিচালিত সকল প্রতিষ্ঠানই করের আওতামুক্ত। ট্রাস্ট কর্তৃক পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের ওপর করারোপ আইনতগতভাবে সাংঘর্ষিক হয় বলেও মত তাদের।

উন্নত বিশ্বের অনেক দেশে করারোপের ক্ষেত্রে ভিন্ন আইনে বিশ্ববিদ্যালয় গঠন ও পরিচালনার নজির রয়েছে জানিয়ে চিঠিতে আরও জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ, ব্রিটেনের কনভেনট্রি ইউনিভার্সিটি, অস্ট্রেলিয়ার টোরেন্স ইউনিভার্সিটি লাভজনক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচালিত হয়। যার মাধ্যমে সরকার রাজস্ব আদায় করে অন্য খাতে বিনিয়োগ করে। ফিলিপাইন ও চীনে লাভজনক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মাঝে জনপ্রিয়। ভারতেও এ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ এর নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন এনে লাভজনক ও অলাভজনক উভয় পদ্ধতির বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার অনুমোদন বিবেচনা করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে বর্তমানে উদ্ভূত পরিস্থিতি ও আইনি জটিলতা পরিহার করা সম্ভব বলে অভিমত সংগঠনটির পক্ষ থেকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন কালবেলাকে বলেন, সমিতির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতি ও ইউজিসিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, সেজন্য এখানে কর নির্ধারণ করা ঠিক নয়। যদি করতেই হয়, তাহলে বিদেশের মতো লাভজনক ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা পদ্ধতি থাকতে পারে।

প্রসঙ্গত, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০০৭ ও ২০১০ সালে পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ১৫ শতাংশ আয়কর আরোপ করা হয়। বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষার্থীদের করা রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট অলাভজনক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আয়কর আদায়ের দুটি প্রজ্ঞাপন অবৈধ বলে রায় দেন। ট্রাস্টের অধীনে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ট্যাক্স-ভ্যাটের আওতামুক্ত হওয়ায় ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে তা রহিত করা হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কালবেলা পাঠকদের কাছে আস্থা অর্জন করতে পেরেছে : টুকু

সাতক্ষীরার তিন কলেজে পাস করেনি কেউ

রুই মাছের ৮ পদ, আজই বানিয়ে ফেলুন আপনার পছন্দের রেসিপিটি

তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার প্রদর্শনী / ‘দেশ বিনির্মাণে তারেক রহমানের পরিকল্পনা সবার কাছে পৌঁছে দেব’

কী বলা হয়েছে জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায়

জুলাই সনদে স্বাক্ষর করলেন যারা

ঝিনাইদহে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন / ‘বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের মাধ্যমে কালবেলা পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করেছে’ 

কলেজে নেই শিক্ষক, ৮ শিক্ষার্থীর সবাই ফেল

ফল খাওয়া নিয়ে ৫ ধারণা — বিজ্ঞান যা বলে

উইন্ডিজ সিরিজে কেমন হবে মিরপুরের উইকেট?

১০

জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল

১১

জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যারা এলেন 

১২

কীভাবে কাজ করবেন, জানালেন নবনির্বাচিত রাকসু ভিপি

১৩

ভারতের পুলিশ কর্মকর্তার ঘুষকাণ্ড, কোটি টাকা-সোনা-বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ

১৪

বর্ণিল আয়োজনে বগুড়ায় কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

১৫

শেরপুরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বক্তারা / ‘কালবেলা এখন মানুষের কাছে নির্ভরযোগ্য গণমাধ্যম’

১৬

গাজীপুরে ধর্ষণের প্রতিবাদে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

১৭

এনসিপির নতুন অঙ্গ সংগঠনের আত্মপ্রকাশ

১৮

ঐতিহাসিক জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শুরু

১৯

থানচিতে খুদে সাংবাদিকদের সঙ্গে কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

২০
X