বাংলাদেশের আলোচিত অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন নিজের জীবনের গভীরতম অনুভূতি, সমাজ থেকে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার অভিজ্ঞতা ও ব্যক্তিগত সংগ্রামের কথা জানালেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সম্প্রতি দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি জানালেন— নিজের মতো করে বাঁচাই তার মূল লক্ষ্য। আর এই পথচলায় কারও মতামত বা সমালোচনায় তার ‘কিছু যায় আসে না’।
বাঁধন লিখেছেন, ‘আমি চেয়েছিলাম সেই রকম মেয়ে হতে যাকে সবাই পরিচালিত করবে, যে বাধ্য হবে, খুশি করবে, চুপচাপ মানিয়ে নেবে। কিন্তু আমি ব্যর্থ হয়েছি। আমি চেষ্টা করেছিলাম আমার পরিবার যেমন মেয়ে চেয়েছিল, সমাজ যেমন নারী আশা করেছিল, ঠিক তেমন হতে। কিন্তু আমি ব্যর্থ— আর সেজন্য আমি নিজেকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ আমার জন্ম হয়নি অন্য কারও চিত্রনাট্য অনুযায়ী বাঁচার জন্য।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমার কথাগুলো মানুষকে অস্বস্তিতে ফেলে, আমার কাজ তাদের স্বাচ্ছন্দ্যের সীমানায় মানায় না। আমি জানি, আমার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সহজ নয় কিন্তু আমি নিষ্ঠুর নই। আমি মানুষকে আঘাত করি না বা অসম্মান করি না, এমনকি যখন তারা আমার সঙ্গে সেটা করে তখনও না। এখন ৪০ পেরোনোর পর আমি নিজের সঙ্গে শান্তি স্থাপন করেছি। আমি আমার জীবন আমার শর্তে বাঁচি— স্বাধীনভাবে, সততার সঙ্গে, ক্ষমাহীনভাবে।’
বাঁধনের মতে, যারা তার অবস্থান বা জীবনযাপন পছন্দ করেন না তারা চাইলে তাকে উপেক্ষা করতে পারেন, ব্লক করতে পারেন, ঘৃণা করতে পারেন- ‘সত্যি বলছি, আমার কিছু যায় আসে না। কারণ আমি যাদের অস্বস্তিতে ফেলি, তাদের বিপরীতে আরও অনেকে আছে যারা আমাকে ভালোবাসে, যারা আমাকে বোঝে, যারা আমার সত্যের মধ্যে শক্তি খুঁজে পায়। আর সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমি নিজেকে ভালোবাসি।’
পোস্টের শেষে তিনি নিজেকে উদ্দেশ করে লেখেন, ‘আমি ভেঙে যাইনি। আমি কেবল সেই পৃথিবীর জন্য অস্বস্তিকর যে পৃথিবী আসল নারীদের ভয় পায়। আমি তোমাকে ভালোবাসি, আজমেরী হক বাঁধন সেই নারী যাকে তুমি অবশেষে হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছ।’
আজমেরী হক বাঁধনের এই খোলামেলা পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকে তার সাহসিকতা ও আত্মমর্যাদার প্রশংসা করেছেন, আবার কেউ কেউ সমালোচনাও করেছেন।
মন্তব্য করুন