‘আমি মোটামুটি সুন্দরী ছিলাম। প্রেমপ্রত্যাশীরা লুকিয়ে উপহার পাঠাত। সেগুলো এখন দূরের স্মৃতি। ভেবে মনে মনে হাসি’, নিজের তরুণী বয়সের প্রেমপ্রত্যাশীদের বিষয়ে এসব আবছা স্মৃতির কথা কালবেলাকে বললেন অশীতিপর অভিনেত্রী দিলারা জামান। আজ ৮০ বছর পূর্ণ করে ৮১ বছরে পা দিয়েছেন তিনি।
মুঠোফোনে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতেই দিলারা জামান বলে উঠলেন, ‘ধুর! বুড়োকালে আবার কীসের জন্মদিন’! এরপরই হেসে ফেললেন। বললেন, এবারের জন্মদিনটা একটু আলাদা। প্রায় দুই-আড়াই যুগ পর আমার দুই মেয়েই এবারের জন্মদিনে কাছে আছে। হয়তো ঈদেও থাকবে। এটাই এবারের জন্মদিনে পাওয়া আমার সবচেয়ে বড় উপহার। আমার মেয়েরা বিদেশ থেকে আসে, কিন্তু এভাবে জন্মদিন ও ঈদকে কেন্দ্র করে থাকতে পারে না। ওরা ওদের সুবিধামতো আলাদা-আলাদাভাবে আমাকে দেখে যায়। এবার একসঙ্গে এসেছে।
ছোটবেলায় কীভাবে জন্মদিন উদযাপন হতো? উত্তরে তিনি বলেন, এত ঘটা করে জন্মদিন করা, কেক কাটা—এগুলো ছিল না। আমার তো ব্রিটিশ আমলে জন্ম। জন্মদিনে মা একটু পায়েশ ও পোলাও রাঁধতেন, পরিবারের সবাই একসঙ্গে খেতাম। তবে মা সকালেই বলে দিতেন—‘আজ তোমার জন্মদিন, একটুও দুষ্টুমি করবে না’। স্কুল-কলেজে ওঠার পর বন্ধুরা মিষ্টি কিনে এনে পালন করত।
তরুণী বয়সে প্রেমপ্রত্যাশী কোনো যুবক জন্মদিনে বিশেষ কোনো উপহার দিয়েছিল কী? এমন প্রশ্ন শুনে বেশ লাজুক হয়ে পড়লেন দিলারা। গলার স্বরেও আঁচ করা গেল লজ্জা। বললেন, ‘আমাকে অনেকেই পছন্দ করত। কারণ কলেজে ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় মোটামুটি সুন্দর ছিলাম। অনেকে আমাকে নিয়ে কবিতা লিখেছে। আমি বুঝতে পারতাম। উপহারও পাঠিয়েছে। লুকিয়ে লুকিয়ে উপহার রেখে গেছে কিংবা অন্য কাউকে দিয়ে পাঠিয়েছে। সেগুলো এখন দূরের স্মৃতি। মনে হলে ভালো লাগে, নিজে নিজে হাসি। একটু স্মৃতিকাতর হই, তারপর আবার হারিয়ে যায়।
কথায় কথায় তিনি বলেন, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ আমার শিক্ষক ছিলেন। তিনি বলতেন, কিছু মানুষ আছে যারা নিজেরা নিজেদের জন্মদিন পালন করেন না বরং অন্যরা তাদের জন্মদিন পালন করেন। তারা হলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ। আমার সবসময় মনে হতো আমি যদি সে রকম বিরাট খ্যাতিমান কেউ হতে পারতাম! তাহলে আমার জন্মদিনও অন্য মানুষ পালন করত।
মন্তব্য করুন