লাতিফুল সাফি ডায়মণ্ড, তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩৮ পিএম
আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আড়াই হাজার গাছ কাটছে বন বিভাগ

কেটে ফেলা হচ্ছে তিস্তা সেচ ক্যানেলের দুই ধারে লাগানো সব গাছ। ছবি : কালবেলা
কেটে ফেলা হচ্ছে তিস্তা সেচ ক্যানেলের দুই ধারে লাগানো সব গাছ। ছবি : কালবেলা

তীব্র দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ। রেহাই পাচ্ছে না প্রাণিকূলের হাজারো জীব। এমন পরিস্থিতিতে যেখানে গাছের গুরুত্ব অপরিসীম। সেখানে পরিবেশ বিপরীতমুখী কাজে মত্ত রংপুর বন বিভাগ। গত দুই মাস ধরে তারাগঞ্জ উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পে ক্যানেলে লাগানো গাছগুলো কাটার যেন উৎসবে মেতেছে তারা।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশবাদীরা। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, তারাগঞ্জ উপজেলার তিস্তা সেচ ক্যানেলের উন্নয়নকাজের জন্য ক্যানেলের দুই ধারে লাগানো গাছগুলো কেটে ফাঁকা করা হয়েছে।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আয়তন অনুযায়ী ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকার কথা থাকলেও তারাগঞ্জ উপজেলায় রয়েছে ৩ শতাংশের কম। তিস্তা সেচ ক্যানেলকেন্দ্রিক বনায়নের একটি বড় অংশ থাকলেও গাছগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে, ফলে ১ শতাংশের নিচে পৌঁছাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরপরও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উন্নয়নমূলক কাজের জন্য গাছগুলো কেটে ফেলার দরপত্র দিয়েছে। ইতোমধ্যে গত দু’মাসে চার তৃতীয়াংশ গাছ কাটা হয়েছে।

স্থানীয়দের মতে, ক্যানেলের দুই ধারে গাছ থাকায় শিক্ষার্থীরা ছায়া পথে স্কুল-কলেজে যায়। খড়া রোদে আরামে পথ চলে সাধারণ ও স্থানীয় পথচারী। বিকেলে ঘুরতে আসত পাশাপাশি এলাকা থেকে অনেকেই।

এ বিষয়ে পরিবেশবাদী ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, এত গাছ একসঙ্গে কাটা ঠিক হয়নি। ক্যানেল সংস্কারের নামে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার প্রজেক্টের তেমন দরকার ছিল না। এতে অর্থের যেমন অপচয় তেমনি গাছগুলো কাটায় পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হবে।

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের সীমান্ত কেল্লাবাড়ি থেকে তারাগঞ্জের পাঁচ কিলোমিটার অংশের প্রায় আড়াই হাজার গাছ বিক্রি করা হয়েছে বলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জবা এন্টারপ্রাইজ সূত্রে জানা গেছে।

২২ লাখ ৫৫ হাজার ৯৫০ টাকায় দরপত্রের মাধ্যমে জবা এন্টারপ্রাইজসহ বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এসব গাছ দেওয়া হয়। গাছ বিক্রির ৮০ শতাংশ টাকা উপকারভোগী ও ২০ শতাংশ টাকা বন বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদ পাবে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জবা এন্টারপ্রাইজের কাছ থেকে সাব কন্ট্রাকে ক্রয় মালিকানা প্রতিষ্ঠান মাসুদ স’মিলসের মালিক মাসুদ রানা মোবাইল ফোনে বলেন, বন বিভাগ থেকে দরপত্র মূলে গাছগুলো কেনা হয়েছে। প্রয়োজনেই গাছগুলো কাটছি। তবে গাছ না থাকলে যাতায়াতে খুব কষ্ট হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল রানা বলেন, গাছগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বন বিভাগের। তবে তাপপ্রবাহের সময় গাছগুলো কাটা ঠিক হয়নি। বাকি গাছগুলো যাতে তাপপ্রবাহ পর্যন্ত কাটা না হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের বলব।

উপজেলা বন কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান রোকন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকেরা ভেকু দিয়ে মাটি ফেলার সময় গাছগুলো ভেঙে দিচ্ছিল। তাই বিভাগীয় অফিস থেকে দরপত্র আহ্বান করে গাছগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেচ ক্যানেলের উন্নয়নমূলক কাজ শেষ হলে ফের গাছ লাগানো হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নতুন ‘বাবরি মসজিদের’ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শনিবার

নতুন প্রজন্ম শান্তিপূর্ণ রাজনীতি প্রত্যাশা করে : ইশরাক

ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা আজ

‘খালেদা জিয়া বাংলাদেশের মানুষের আপনজন’

২০ বছরের ব্যবসা বাঁচাতে ছাড়লেন চেয়ারম্যান পদ

তাসনিম অনন্যার অনুসন্ধানে মহাবিশ্বের চাঞ্চল্যকর রহস্য উন্মোচন

২০২৬ বিশ্বকাপে কবে মুখোমুখি হতে পারে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল?

বিশ্বকাপের গ্রুপ অব ডেথে ফ্রান্স

নুরুদ্দিন অপুর হাত ধরে আ.লীগ নেতার বিএনপিতে যোগদান

২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠিত: দেখে নিন কোন গ্রুপে কোন দল

১০

২০২৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ যারা

১১

রাতে আবার হাসপাতালে গেলেন জুবাইদা রহমান

১২

যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরিধি বাড়ছে, তালিকায় ৩০টির বেশি দেশ

১৩

খালেদা জিয়ার এন্ডোসকপি সম্পন্ন, বন্ধ হয়েছে রক্তক্ষরণ

১৪

‘বাঁধের মাটি বড় বড় খণ্ড হয়ে ঝুপঝাপ শব্দে ভেঙে পড়ে’

১৫

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

১৬

দেড় হাজার দৌড়বিদের অংশগ্রহণে হাফ ম্যারাথন

১৭

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ফ্রি যাত্রীসেবা

১৮

বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা, প্রতিবাদে বিক্ষোভ 

১৯

যুবদল নেতা সুমনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

২০
X