নারীদের প্রজনন অঙ্গের ক্যানসারের মধ্যে অন্যতম অ্যান্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসার। এতদিন বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে রাতে অ্যান্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসারের প্রকোপ বেশি লক্ষ্য করা গেলেও বর্তমানে বাংলাদেশেও এই ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারে ‘ক্যানসারের অত্যাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা’ শীর্ষক সেমিনারে এমন তথ্য জানান বক্তারা।
বিশেষ এই স্বাস্থ্য সভায় বাংলাদেশে অ্যান্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসারের বর্তমান চিত্র ও অত্যাধুনিক চিকিৎসা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেন ক্যানসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। জানানো হয়, নারীদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ অ্যান্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসার। যেটি স্ত্রীরোগ ঘটিত ম্যালিগন্যান্ট টিউমার যা পরবর্তীতে ক্যানসারে পরিণত হয়। জরায়ুর আস্তরণ গঠনকারী কোষের স্তরে শুরু হয় অ্যান্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসার। যেটি জরায়ুর বডি/উপরিভাগের ক্যানসার নামেও পরিচিত।
আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আনুমানিক ৬৭ হাজার ৮৮০ জন মানুষ এই ক্যানসারে শনাক্ত হতে পারেন যার মধ্যে মৃত্যু হতে পারে ১৩ হাজার ২৫০ জনের। যদিও এই অনুমানভিত্তিক সংখ্যার মধ্যে অ্যান্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসার এবং জরায়ু সারকোমা উভয়ই অন্তর্ভুক্ত।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে ২০০০ সালের মাঝামাঝি থেকে এই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ভাগ বেড়েছে। অ্যান্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসারের সঠিক কারণ এখনও অজানা, তবে জানা যায় যে অ্যান্ডোমেট্রিয়ামের কোষের ডিএনএতে পরিবর্তন বা মিউটেশন তৈরি করার জন্য কিছু ঘটে। অস্বাভাবিক কোষগুলি বৃদ্ধি বৃদ্ধি পায় এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে বৃদ্ধি পায় এবং তারা একটি নির্দিষ্ট সময়ে মারা যায় না। এই জমে থাকা অস্বাভাবিক কোষগুলি একটি ভর বা টিউমার তৈরি করতে পারে।
অ্যান্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসার প্রধানত মেনোপজ পরবর্তী নারীদের মধ্যে বেশি লক্ষ্য করা যায়। দেরিতে মেনোপজ শুরু হওয়া, স্থূলতা, বেশি বয়স, কখনো গর্ভবতী না হওয়া, হরমোন থেরাপি, বংশগত এ রকম নানা কারণে এ রোগ হতে পারে।
অ্যান্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসার সম্পর্কিত বিশেষ আলোচনা করেন হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের অবস্টিক অ্যান্ড গাইনোকোলজি রিপ্রোডাক্টিভ বায়োলজির অধ্যাপক ডা. অ্যানিক্যাগ্রিন গুডম্যান, ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের ক্লিনিক্যাল অনকোলজি অ্যান্ড অ্যাডভাইজর সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. পারভীন আক্তার বানু, গাইনি অনকোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. সাবেরা খাতুন, অধ্যাপক, ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস, অধ্যাপক ডাক্তার সাহানা পারভীন, ক্লিনিক্যাল অনকোলজি ও রেডিয়েশন বিভাগের বিগ্রে জেনা. (অব.) অধ্যাপক ডা. ইউসুফ আলী, অধ্যাপক ডা. মো. এহতেশামুল হক, অধ্যাপক ডা. কাজী মুশতাক হোসাইন এবং অধ্যাপক ডা. বিশ্বজিৎ ভৌমিক।
অ্যান্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসার আধুনিক চিকিৎসায় গ্রহণ করতে মলিকুলার ক্লাসিফিকেশনের সকল সুবিধা ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারে রয়েছে।
মন্তব্য করুন