দিনভর কাজকর্মের পর, রাত হলো বিশ্রামের সময়। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে অনেকেই গল্প করে একটু সময় কাটান, তারপর ঘুমিয়ে পড়েন। কিন্তু সমস্যা হয় তখন, যখন ঘুমের মধ্যে হঠাৎ করে ঘেমে ভিজে যায় পুরো শরীর। তখন আর ঘুমটা আরামদায়ক থাকে না, ঘুম ভেঙে যায়, অস্থির লাগে।
আরও পড়ুন : মাত্র ৫ কৌশলে শেখার গতি বাড়বে, মনোযোগও থাকবে বেশি
অনেকেই ভাবেন, এটা হয়তো গরমের কারণে বা একেবারে সাধারণ কিছু। কিন্তু জানেন কি, নিয়মিত রাতে অতিরিক্ত ঘেমে ওঠা হতে পারে কোনো গভীর শারীরিক সমস্যার লক্ষণ? এমনকি এটি ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণও হতে পারে।
রাতে ঘুমের মধ্যে ঘাম হওয়ার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমন:
কিছু নির্দিষ্ট ধরনের ক্যানসারের (যেমন: লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা, হাড় বা লিভারের ক্যানসার) ক্ষেত্রে শরীর অস্বাভাবিকভাবে ঘামতে পারে, বিশেষ করে রাতে।
শরীর যখন ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করে, তখন জ্বরের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। আবার ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু ওষুধ (যেমন: কেমোথেরাপি, হরমোনাল থেরাপি, মরফিন) থেকেও ঘাম হতে পারে।
সাথে যদি দেখা যায় ওজন দ্রুত কমে যাচ্ছে, জ্বর হচ্ছে বা দুর্বল লাগছে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
হরমোনের পরিবর্তন
মেয়েদের মেনোপজ বা পেরিমেনোপজ সময়ে শরীরে হরমোনের ওঠানামা হয়, এতে ঘাম হতে পারে। গর্ভাবস্থায় রক্তপ্রবাহ ও হরমোন বৃদ্ধির ফলেও ঘাম হওয়া স্বাভাবিক।
সংক্রমণ
যক্ষ্মা বা হৃৎপিণ্ডের কিছু সংক্রমণ (যেমন: এন্ডোকার্ডাইটিস) থেকেও ঘাম হতে পারে।
অতিরিক্ত ঘাম রোগ (ইডিওপ্যাথিক হাইপারহাইড্রোসিস)
এই রোগে শরীর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘাম উৎপাদন করে, বিশেষ করে রাতে।
থাইরয়েড সমস্যা (হাইপারথাইরয়েডিজম)
থাইরয়েড গ্রন্থি অতিরিক্ত হরমোন তৈরি করলে ঘাম বাড়তে পারে।
মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা
উদ্বেগ, টেনশন বা ভয় থেকেও রাতে ঘাম হতে পারে।
জীবনযাপন সংক্রান্ত কিছু বিষয়
ঘুমানোর আগে গরম চা-কফি, মসলাদার খাবার, অ্যালকোহল ইত্যাদিও ঘাম বাড়াতে পারে।
যদি মাঝে মধ্যে এমনটা হয়, তাহলে হয়তো চিন্তার কিছু নেই। তবে যদি নিয়মিত হয় বা ঘামের পাশাপাশি অন্য উপসর্গও (যেমন: ওজন কমে যাওয়া, জ্বর, ক্লান্তি) দেখা দেয়, তাহলে ডাক্তার দেখানো খুব জরুরি।
আরও পড়ুন : জ্বর হলে জিভের স্বাদ চলে যাওয়া হতে পারে বড় রোগের লক্ষণ
রাতে ঘুমানোর সময় ঘেমে যাওয়া একেবারে হালকা বিষয় নাও হতে পারে। শরীর মাঝেমধ্যে নানা উপায়ে আমাদের সংকেত দেয়। তাই শরীরের এসব বার্তা অবহেলা না করে, সময় থাকতে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
সূত্র: হেলথ লাইন
মন্তব্য করুন