কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কোন বয়সের পর কমতে শুরু করে শুক্রাণু, যা বলছে গবেষণা

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

সন্তান ধারণের ক্ষমতা বা প্রজনন নিয়ে আলোচনা উঠলেই সাধারণত দৃষ্টি যায় নারীদের দিকে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সন্তান জন্মদানে পুরুষদের ভূমিকা মোটেও কম নয়, বরং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতাও নানাভাবে প্রভাবিত হয়।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য—৪৩ বছর বয়স পার হলেই দ্রুত কমতে শুরু করে পুরুষের শুক্রাণুর গুণগত মান। শুধু তাই নয়, এতে ভবিষ্যৎ সন্তানের জিনগত ঝুঁকিও বেড়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

ব্রিটেনের খ্যাতনামা ওয়েলকাম স্যাঙ্গার ইনস্টিটিউটের গবেষকরা ২৪ থেকে ৭৫ বছর বয়সী ৮১ জন সুস্থ পুরুষের শুক্রাণু বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুক্রাণুর জিনে ‘মিউটেশন’ বা পরিবর্তন ঘটে। গবেষণায় দেখা যায়, প্রতি বছর গড়ে শুক্রাণুতে ১ দশমিক ৬৭টি নতুন জিনগত পরিবর্তন যোগ হয়। অর্থাৎ যত বয়স বাড়ছে, শুক্রাণুর ডিএনএ ততটাই পরিবর্তিত হচ্ছে।

গবেষকদের ভাষায়, প্রায় ৪৩ বছর বয়সেই এই পরিবর্তনের হার হঠাৎ বেড়ে যায়; যাকে তারা বলছেন শুক্রাণুর ‘টার্নিং পয়েন্ট’। এই পরিবর্তনের ফলে কিছু শুক্রাণুতে এমন জিনগত ত্রুটি দেখা দেয় যা ভবিষ্যৎ সন্তানের মধ্যে বিরল রোগ বা বিকাশজনিত সমস্যা তৈরি করতে পারে। উদাহরণ হিসেবে গবেষকরা উল্লেখ করেছেন নুনান সিনড্রোম, অ্যাপার্ট সিনড্রোম ও কস্টেলো সিনড্রোম। এসব রোগ শিশুর হৃদযন্ত্র, হাড়ের গঠন এবং স্নায়ু বিকাশে গুরুতর প্রভাব ফেলে।

গবেষক দলের প্রধান ড. মাইকেল ও ডোনোভান বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে মনে করতাম, কেবল নারীদেরই প্রজনন বয়সের সীমা রয়েছে। কিন্তু এখন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, পুরুষদেরও একটি জৈবিক ঘড়ি আছে। বয়স বাড়লে শুক্রাণুর মান ও জিনের স্থিতিশীলতা—দুটোই কমে যায়।

বিজ্ঞানীরা আরও জানান, এসব পরিবর্তিত শুক্রাণু অনেক সময় ‘স্বার্থপর শুক্রাণু’র মতো আচরণ করে। অর্থাৎ তারা দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং স্বাভাবিক শুক্রাণুগুলোকে প্রতিযোগিতায় হারিয়ে দেয়। ফলে ক্ষতিকর মিউটেশনগুলির পরিমাণ আরও বাড়ে।

যদিও গবেষণাটি ছোট পরিসরে হয়েছে, তবুও এটি প্রথমবারের মতো স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে যে, পুরুষদের বয়স বাড়লে জিনগত ঝুঁকি কতটা বাড়ে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, যারা ভবিষ্যতে সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তাদের উচিত সুস্থ জীবনযাপন বজায় রাখা, ধূমপান ও অতিরিক্ত মদ্যপান থেকে দূরে থাকা এবং প্রয়োজনে আগেভাগেই শুক্রাণু সংরক্ষণ করে রাখা।

তারা আরও জানান, একজন সুস্থ পুরুষের প্রতি মিলিলিটারে ১৫ মিলিয়নের বেশি শুক্রাণু থাকা উচিত এবং মোট সংখ্যা ৩৯ মিলিয়নের কম হওয়া উচিত নয়। শুধু সংখ্যা নয়, শুক্রাণুর গতি, আকার ও গুণমানও গর্ভধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সূত্র : আজকাল, ব্রিটিশ ফার্টিলিটি সোসাইটি, নোভা আইভিএফ ফার্টিলিটি.কম

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের জেলা সহসভাপতিসহ গ্রেপ্তার ৩

আওয়ামী লীগের ৮ নেতার পদত্যাগ

দগ্ধ বেলালকে দেখতে লক্ষ্মীপুরে তারেক রহমানের উপহার নিয়ে রিজভী

পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

হিন্দু যুবককে পিটিয়ে মারলেও সরকারের অবস্থান দেখা যায়নি : ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টি

সৌদিতে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

আহমদ ছফার নামে সড়কের নামকরণ

সীমান্তে সাড়ে ২১ কোটি টাকার চোরাই পণ্য জব্দ

সড়কের এক কিমি যেন মরণফাঁদ, ছয় মাসে প্রাণহানি ১১

‘কোটি মানুষের বুক ভেদ করে তারেক রহমানের ক্ষতি করার শক্তি কারও নেই’

১০

শ্রীলঙ্কায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের জন্য জরুরি বার্তা

১১

এক রাতে দুই পরিবারের ১০ গরু চুরি

১২

শরিফ ওসমান হাদির কবরের পাশে চরমোনাই পীর

১৩

স্টেট ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন / কেবল ডিগ্রি নয়, সক্ষমতা ও শৃঙ্খলাও জরুরি : আসিফ নজরুল

১৪

হিন্দুদের পাশে থাকবে বিএনপি : প্রিন্স

১৫

পাঁচ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২৪ হাজার কোটি টাকা

১৬

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থি ৬ ডিনের পদত্যাগ

১৭

কারাগারে বসে মনোনয়নপত্র নিলেন জাপার সাবেক এমপি

১৮

দিনাজপুরে হিম হাওয়ায় কনকনে শীত অনুভূত

১৯

গণঅধিকার পরিষদকে যে ২ আসনে আশ্বাস দিল বিএনপি

২০
X