সাস্থ্য সচেতনতার এই যুগে আমরা অনেকেই এখন শরীরচর্চার গুরুত্ব বুঝি। হাঁটা, দৌড়নো, যোগব্যায়াম শরীরচর্চার ক্ষেত্রে এখন সবই জনপ্রিয়। কিন্তু জানেন কি, সাইকেল চালানো এমস একটি শরীরচর্চা যা শুধু আপনার পেশি নয়, আপনার মস্তিষ্ককেও ভালো রাখে? নিয়মিত সাইকেল চালালে স্মৃতিক্ষয়/ভুলে যাওয়া রোগ বা ডিমেনশিয়া হওয়ার ঝুঁকিও অনেক কমে যায় বলে জানা যাচ্ছে বিভিন্ন গবেষণা থেকে।
ডিমেনশিয়া কী?
ডিমেনশিয়া হলো এমন এক ধরনের মানসিক অবস্থা, যেখানে আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে। এটি সাধারণত বয়স্কদের মধ্যে দেখা দিলেও যেকোনো বয়সেই হতে পারে। বিশেষ করে যদি কারো স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাই কোলেস্টেরল বা বিষণ্ণতার সমস্যা থেকে থাকে।
ডিমেনশিয়ার লক্ষণসমূহ
১. স্মৃতিভ্রান্তি (নতুন কোনো তথ্য মনে রাখতে না পারা)
২. পরিচিত পথ বা লোককে ভুলে যাওয়া
৩. সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হওয়া
৪. কথা বলার সময় উপযুক্ত শব্দ খুঁজে না পাওয়া
৫. মেজাজ পরিবর্তন বা আচরণের অস্বাভাবিকতা
সাইকেল চালানো কীভাবে সাহায্য করে?
সাইকেল চালানো একটি কার্যকর শারীরিক ব্যায়াম। সহজভাবে বললে, এটি হৃৎস্পন্দন বাড়ায়, রক্ত চলাচল সক্রিয় করে এবং অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায়। এই কারণে মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত রক্ত ও পুষ্টি পৌঁছে যায়। তাই স্মৃতি ভালো থাকে এবং মানসিক চাপ কমে।
মস্তিষ্কের জন্য সাইকেল চালানোর উপকারিতা
১. নিয়মিত সাইকেল চালালে মস্তিষ্কে নতুন কোষ তৈরি হয়।
২. এটি মনোযোগ ও একাগ্রতা বাড়ায়।
৩. মস্তিষ্কে ডোপামিন ও সেরোটোনিন হরমোন নিঃসরণ হয়, যা মন ভালো রাখতে সাহায্য করে।
৪. মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমে, যা ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে সহায়ক।
বিজ্ঞান কী বলছে?
২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা যায়, যারা নিয়মিত সাইকেল চালান, তাদের মধ্যে আলঝেইমার বা অন্যান্য ধরনের ডিমেনশিয়া হওয়ার ঝুঁকি ৩০-৪০ শতাংশ কম।
অন্য এক গবেষণায় দেখা যায়, সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন যদি ৩০ মিনিট সাইকেল চালানো যায়, তবে স্মৃতিশক্তি ভালো থাকে। তাই, শরীর ও মস্তিষ্ক ভালো রাখতে রোজ অল্প সময় হলেও সাইকেল চালান। বয়স যতই হোক, নিজেকে সুস্থ রাখুন।
মন্তব্য করুন