শারীরিক সমস্যার মতো মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হন অনেকেই। কিন্তু তারা বুঝতে পারেন না, তাদের মধ্যে এই মানসিক সমস্যা তৈরি হয়েছে। আবার অনেকের ক্ষেত্রে এ রোগের লক্ষণ কিছুটা প্রকাশ পেলেও তেমন গুরুত্ব দেন না। এতে ধীরে ধীরে মানসিক সমস্যাগুলো বাড়তে থাকে।
মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে হঠাৎ কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার ও আচরণে বড় ধরনের পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়, যা তার দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলতে শুরু করে। এ অবস্থায় ওই ব্যক্তির দিকে আলাদাভাবে মনোযোগ দেওয়া জরুরি হয়ে পড়ে।
শারীরিক সমস্যার মতো মানসিক সমস্যার লক্ষণগুলো চোখে পড়ার মতো প্রকাশ পায় না বলে অনেকেই বুঝতে পারেন না, কখন এ রোগের জন্য চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। আবার এ সমস্যা পারিবারিক অথবা সামাজিক ক্ষেত্রেও অনেক সময় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
- অনেক দিন ধরে নিজেকে সবার কাছ থেকে সরিয়ে রাখা। - টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মন খারাপ থাকা। - অন্যদের সঙ্গে একেবারে কথা বলতে না চাওয়া। - সবার সঙ্গে ঝগড়া করা। - হঠাৎ হঠাৎ করে বেশি উত্তেজিত হয়ে ওঠা। - গায়েবি আওয়াজ বা কথা শুনতে পাওয়া। - অন্যদের অকারণে সন্দেহ করতে শুরু করা। - গোসল বা দাঁত মাজার মতো নিয়মিত প্রাত্যহিক কাজ করা বন্ধ করে নিজের প্রতি যত্ন না নেওয়া। - যেসব কাজে আনন্দ পাওয়া, সেসব কাজে নিরানন্দ ও আগ্রহ কমে যাওয়া। - সামাজিক সম্পর্ক থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া। - নিজেকে নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা করা বা নিজেকে দায়ী মনে হওয়া সবকিছুতে। - সিদ্ধান্তহীনতা বা মনোযোগ কমে যাওয়া এবং খুব তীব্র হলে আত্মহত্যার চিন্তা পরিকল্পনা ও চেষ্টা করে। - অতিরিক্ত শুচিবায়ুগ্রস্ত হয়ে ওঠা। - ঘুম অস্বাভাবিক কম বা বাড়তে পারে। - খাবারে অরুচি তৈরি হওয়া বা রুচি বেড়ে যাওয়া। - বাসার, অফিসের বা পেশাগত কাজের প্রতি অনীহা তৈরি হওয়া বা আগ্রহ হারিয়ে ফেলা।
এসব লক্ষণেই যে একজন ব্যক্তি মানসিক রোগে আক্রান্ত, সেটা বলা যাবে না। তবে এসব লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। তিনি এসব লক্ষণ বিশ্লেষণ করে বলতে পারবেন, ওই ব্যক্তি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন কিনা। তখন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের দুইভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। একটি হলো কাউন্সেলিং বা পরামর্শ সেবা; অন্যটি ওষুধের মাধ্যমে। অনেক সময় কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সহজেই এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু এতে যদি কাজ না হয়, তখন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সহায়তা নিতে হবে।
মন্তব্য করুন