পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দেশে এই মুহূর্তে উপোস থাকার মতো দরিদ্র মানুষ নেই। জনগণকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে অত্যন্ত গভীরে গিয়ে কাজ করছে সরকার। মানুষ যাতে না খেয়ে থাকে, অন্তত পান্তা ভাত খেয়েও বাঁচতে পারে সেজন্য সরকার বিভিন্ন ভাতা দিচ্ছে।
সোমবার (১২ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে টেলিভিশন রিপোর্টাস ইউনিটি অব বাংলাদেশের (ট্রাব) আয়োজিত অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক রেলমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মুজিবুল হক এবং পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এখন আর দেশে কেউ না খেয়ে থাকে না। যারা রাস্তা-ঘাটে না খেয়ে থাকে, তারা হয়তো সাধু-সন্ন্যাসী পর্যায়ের লোকজন। যারা কাজ করতে পারে, তারা কেউ না খেয়ে থাকে না।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের ধরন হচ্ছে ধাক্কা দিয়ে ঘুম ভাঙানো। যেসব উন্নয়নের কথা মানুষ ভাবতেও ভয় পেত প্রধানমন্ত্রী তা করে দেখিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি নিজেই কোনোদিন ভাবিনি পদ্মা সেতু করা সম্ভব কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সেটি সম্ভব করেছেন। এ ছাড়া নদীর নিচ দিয়ে টানেল নেয়া এবং আকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোর মতো সাহস একমাত্র শেখ হাসিনাই করতে পেরেছেন। তিনি তা বাস্তবায়ন করেও দেখিয়েছেন।
বর্তমান সরকারের আমলে গ্রামের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, গ্রামের মানুষ এখন আর কষ্টে নেই। প্রধানমন্ত্রী তাদের ঘর দিয়েছেন। এ ছাড়াও যারা অসহায় তারা ভাতা পাচ্ছেন। আমাদের কাছে হয়তো এত অল্প ভাতার দাম নেই। কিন্তু যাকে দেয়া হচ্ছে তার কাছে এর মূল্য অনেক।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে মানবাধিকারের কথা বলাই যায়। কিন্তু গ্রামের মানুষের দরকার ঘর, মাথা গোঁজার একটি জায়গা বা সুপেয় পানির জন্য একটি টিউবওয়েল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য সব ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। গ্রামের সাধারণ মানুষ মানবাধিকার বা গণতন্ত্রের মতো এত ভারি ভারি কথা বোঝে না। তাদের দরকার উন্নয়ন, শেখ হাসিনার সরকার সেটি নিশ্চিত করেছে। এতেই খুশি তারা। যখন প্রথম ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলা হয়েছিল, অনেকেই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছেন। এখন তারাই দেখছেন ডিজিটাল বাংলাদেশ আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। এখন আমাদের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ। সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
এম এ মান্নান বলেন, এখন গ্রামের বাড়িগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায়, একটি ঘর, সামনে বাগান, পাকা বাথরুম, টিউবওয়েল। এটা প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ফসল।
সামনের দিনগুলোতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সমর্থন জানানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অতীতে আমরা এমন কোনো নেতৃত্ব পাইনি। আমাদের সৌভাগ্য শেখ হাসিনার মতো একজনকে পেয়েছি। তিনি আপনাদের সমর্থন পাবার যোগ্য।
যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডাবল গেইজ রেললাইন বসানো হচ্ছে। এক সঙ্গে ৬টা অত্যাধুনিক ড্রিম লাইনার কেনা হচ্ছে, এটা একটা অবাক করা ব্যাপার।
সড়কের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আগে হাওর এলাকায় রাস্তা নির্মাণ করার পরে বাড়িতে আসতে আসতে ভেঙে যেত। কিন্তু এখন সেসব এলাকায় এমনভাবে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে, যা দিয়ে বিশাল বিশাল গাড়ি গেলেও কিছু হয় না।
সাবেক রেলমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মুজিবুল হক বলেন, গ্রামের মানুষ অনেক সন্তুষ্ট। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে কিছুদিনের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশ হয়ে যাবে। এর জন্য পাঁচটি শর্তের তিনটি পূরণ করলেই চলে, অথচ বাংলাদেশ পাঁচটিই পূরণ করে দেখিয়েছে। এটা একমাত্র শেখ হাসিনার জন্য সম্ভব হয়েছে।
মন্তব্য করুন