বুধবার, ২৮ মে ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৬ পিএম
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

খাবারের মেন্যু দেখে দিন-রাত বুঝতেন গুমের শিকার বন্দিরা

খাবারের মেন্যু দেখে দিন-রাত বুঝতেন গুমের শিকার বন্দিরা
নূর খান লিটন। ছবি: সংগৃহীত

আমরা যে পরিমাণ সিক্রেট সেল দেখেছি, যে পরিমাণ বন্দিরা ফেরত এসেছে, তাদের বয়ান থেকে আমরা যা জেনেছি তা, ভয়াবহ। বন্দিদেরকে রাখা হতো ৪ ফিট লম্ব আর ৩ ফিট চওড়া ছোট্টো ঘরে। সেখানে রাতদিনের তফাৎ বোঝা যেত না। বন্দিরা তাদের খাবার দেখে দিনরাতের হিসাব মেলাতেন। বন্দি ঘরের দেয়ালে গুহামানবদের মতো আঁচড় দিয়ে বিভিন্ন কথা লিখে রাখতেন বন্দিরা।

পতীত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুমের তদন্ত শেষে এমন ভয়াবহ বর্ণনা দিয়েছেন গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্য নূর খান লিটন। সম্প্রতি তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানান।

নূর খান লিটন বলেন, বাথরুমের চেয়েও ছোট সেসব বন্দি ঘর। সেখানে আলো-বাতাস সীমিত পরিমাণে প্রবেশ করানো হতো, যাতে সেখানকার বন্দিরা রাতদিনের পার্থক্য না বোঝে। যখন খাবার দেওয়া হতো, বন্দিরা খাবার দেখে শনাক্ত করতে পারতেন এখন দিন না রাত। সকালের নাস্তায় সাধারণত রুটি বা খিচুড়ি দেওয়া হতো, যা দেখে বুঝতো তারা একটি দিন পার করেছে। আমরা গুহামানবের কথা শুনেছি, যেখানে তারা দেয়ালে চিত্র আঁকতো, সংকেত লিখে রাখতো। আমরা এখানে দেখেছি বন্দিরা থালা দিয়ে বা ইটের টুকরা দিয়ে দেয়াল আঁচড় কেটে দিনের হিসাব রাখতো। এভাবে আমরা ১৮২ দিন থেকে ৩০০ দিনের মতো ডেট পেয়েছি। অস্পষ্ট কয়েকটি মোবাইল নম্বর এবং দু’একটি নামও পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, মানুষ মৃত্যুর আগে যে আকুতি জানাই- সেসব মর্মস্পর্শী বার্তাও পেয়েছি। যেমন- কেউ লিখেছেন ‘আই লাভ মাই ফ্যামিলি’। কেউ লিখেছেন- ‘বিজয় সুনিশ্চিত’। কেউ লিখেছেন- ‘হে আল্লাহ তুমি আমাকে রক্ষা করো’ আবার কেউ কুরাআনের আয়াত লিখে রেখেছেন।

নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, পাশাপাশি মানুষকে কিভাবে নির্যাতন করা হতো তার কিছু সিনড্রোম (নমুনা) আমরা পেয়েছি। কাউকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যখন হত্যা করা হয়; তখন তাকে ইনজেকশন পুশ করা হয় অথবা কাউকে পলিথিন দিয়ে মুখ মুড়িয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়। সেসব মরদেহ পেট কেটে সিমেন্টের বস্তা দিয়ে বেঁধে নদীর মাঝখানে ফেলে দেওয়া হতো।

নূর খান লিটন বলেন, লাশ ফেলে দেওয়ার কিছু কিছু জায়গা আমরা দেখেছি। যেমন পোস্তগোলায় একটা নৌকা রাখা ছিলো, যেটা সুন্দরবনের দস্যুদের কাছ থেকে উদ্ধার করা। পরে সে নৌকাটি ঢাকায় নিয়ে এসে গুমের হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা হতো।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কী সিদ্ধান্ত নিলেন, জাতিকে জানান : রাশেদ খাঁন

জুলাই আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার খোঁজ নিল ডিএমপি কমিশনারের প্রতিনিধি দল

দেশের আকাশে চক্কর দিয়ে গেল ভারতের তিনটি ড্রোন

দ্রুত ডাকসুর ঘোষণা না আসলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি শিবিরের

অগ্রণী ব্যাংক ও ব্রাকনেটের মধ্যে প্রযুক্তি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত

সচিবালয়ে প্রবেশে বাধা অনাকাঙ্ক্ষিত : ইউট্যাব

সাবেক ভূমিমন্ত্রীকে বাসায় পাঠিয়ে দিল পুলিশ

আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা চরমোনাই পীরের

আর কোনো তালবাহানা নয়, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে : খোকন

পুরোনো ভুল থেকে শিখতে চান লিটন

১০

নারীর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের ঘটনায় মহিলা পরিষদের উদ্বেগ 

১১

সম্মেলন ছাড়াই লক্ষ্মীপুরে ছাত্রদলের ১০ কমিটি

১২

আলোচনা সভায় বক্তারা / ১০ মাসেও সরকারের মনের কথা বোঝা যাচ্ছে না

১৩

রাজশাহীতে পরিত্যক্ত ‘রকেট লঞ্চার’ উদ্ধার

১৪

সুব্রত বাইনকে গ্রেপ্তারের পর সেনা সদরের বার্তা

১৫

বগুড়ায় মিডিয়া কাপ ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন শহীদ শিমুল একাদশ

১৬

সুব্রত বাইনের উত্থান কীভাবে

১৭

রাবিতে এটিএম আজহারের মুক্তির প্রতিবাদে বামপন্থি ছাত্রসংগঠনের মশাল মিছিলে হামলা

১৮

ভারতীয় পুশইনের ক্ষেত্রে নীরব অন্তর্বর্তী সরকার : ১২ দলীয় জোট

১৯

ঢাকায় তারুণ্যের সমাবেশে বক্তব্য দিতে পারেন খালেদা জিয়া

২০
X