কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪১ পিএম
আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সেই অটোরিকশা নিয়ে বুয়েট শিক্ষকের স্ট্যাটাস

বুয়েটের নকশাকৃত অটোরিকশা। ছবি : সংগৃহীত
বুয়েটের নকশাকৃত অটোরিকশা। ছবি : সংগৃহীত

তিন বছর গবেষণা করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নকশাকৃত অটোরিকশা নিয়ে নিজের মন্তব্য তুলে ধরেছেন বিশ্ববিদ্যালটির অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউটের সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজ।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নিজের ফেসবুক আইডিতে এ মন্তব্য তুলে ধরেন তিনি।

তিনি বলেন, ২০২২ সাল থেকে যে ডিজাইন নিয়ে কাজ হচ্ছে বলে পত্রিকায় পড়েছি, ঠিক সেটার মতো ব্যাটারি ড্রিভেন যান (ইন্ডিকেটর, লাইটসহ) আগে থেকেই আমাদের রাস্তায় চলছে। যেহেতু এটা প্রায় তিন বছর ধরে গবেষণা করা হয়েছে তাই নিশ্চয়ই অনেক কিছু আছে যা আমি বুঝি না। কিন্তু প্রথম দেখায় আমার কয়েকটা পর্যবেক্ষণ :

১) আউটলুকিং : এটাকে দেখলেই কেন জানি মনে হচ্ছে মূল সড়কের জন্য তৈরি। যেমন- আপনি একদিন বাসায় একটু ভালো জামা-কাপড় পরলে বা একটু সাজলেই অন্যরা জিজ্ঞাসা করে যে ‘কোথাও যাচ্ছ নাকি?’ যদিও আপনি আসলে কোথাও যাবেন না। আমি চাই এ ধরনের যান মূল রাস্তায় না চলুক, আবার সরকারও চাচ্ছে। তাই এটার আউটলুকিংটা আমাকে বিভ্রান্ত করছে।

২) ব্যাটারি : সেই তো শক্তির উৎস ব্যাটারিই থেকে গেল... এতদিনের গবেষণা করে যে প্রডাক্ট আসবে সেটাতে আমি নতুনত্ব খুঁজব। এখানে নতুন কি? ব্যাটারি থাকলে অবৈধ বিদ্যুৎসংযোগ থাকবে, থাকবে বিদ্যুতের অপচয়, থাকবে লোডশেডিং, আর ওই টাকা আপনাকে-আমাকে দিতে হবে নিশ্চিত। আগে বুঝতে হবে এই জিনিস চলবে মাইনর রোডে, যেখানে স্পিড মুখ্য নয়।

তিনি লেখেন, আমি খুশি হতাম যদি ব্যাটারির বদলে বর্তমান প্যাডেল রিকশা আদলেই থাকবে, কিন্তু এখানে চালকের কষ্ট কমাতে গতিশক্তিকে কাজে লাগানোর কোনো উপায় রাখতে হবে। যেমন- ফ্লাই হুইলের ব্যবহার বা অন্য কিছু। গবেষণা অর্থ তো তাই না কি। আর গতিশক্তিকে কাজে লাগিয়ে হেডলাইট, ইনডিকেটর জ্বালানো যাবে, তবেই না কিছুটা নতুনত্ব। আমি বেলজিয়ামে যে সাইকেল চালাতাম সেটা যত প্যাডেল দিব তত হেডলাইট জ্বলে।

৩) অবয়ব বা কাঠামো : এই কাঠামো আমার কাছে মাইনর রোডের জন্য উপযোগী মনে হচ্ছে না, কারণ মাইনর রোডে স্পেস কম আর রেগুলার ঘষা-মাজা খেতে হবে। এই কাঠামোতে আমাদের আগে থেকেই আছে, এমনকি সামনের চাকায় হাইড্রলিক ব্রেকসহ, ইন্ডিকেটর, হেডলাইটসহ। এটা কেমন জানি স্পেসিয়াস লাগে।

৪) স্পিড : এই যানের সর্বোচ্চ স্পিড নাকি ৩০ কিমি/ঘণ্টা হবে। মাই গড !!! (যেটা আমাদের সরকারের স্পিড লিমিট গাইডলাইন অনুসারে মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতিসীমা)। যদি এটা মাইনর রোডে চলে তাহলে এই স্পিড দিয়ে আমি কি করব? এটার গতি হতে হবে বর্তমান প্যাডেল রিকশায় যত গতি সম্ভব সেই রেঞ্জে, যদি সেফটি চাই।

তিনি লেখেন, আমি সাইকেল চালাই আর তিনবার ব্যাটারি রিকশার গুতা খাইছি কারণ বামে থেমে থাকা ওই রিকশা হঠাৎ করে স্টার্ট দিয়েছে আর যেহেতু এটা প্যাডেল না তাই আচমকা আমার সামনে চলে আসছে। এখন এখানে যতই আমি ইন্ডিকেটর আর লুকিং গ্লাস দেই না কেন যদি চালক সেটা না দেখে আর তার হাতে ৩০ কিমি/ঘণ্টা চলার মতো একটা যান থাকে… রেড ফ্লাগ।

৫) তিন চাকায় হাইড্রলিক ব্রেক : এটা আমি ঠিক শিওর না, বাট ৩০ কিমি/ঘণ্টা চলতে পারে এমন যান যদি তিন চাকায় ব্রেক করে এটা না আবার উল্টে যায় বা স্লিপ করে। বিশেষ করে চাকা পুরোনো হলে এটা হবে শিওর। অনেক ক্রাশ ইনভেস্টিগেশন করে দেখেছি বড় বড় গাড়ি কীভাবে হার্ডব্রেক করে উল্টে বা পিছলে যায়।

৬) দাম : এই যানের দাম বলা হচ্ছে ১.৫ লাখ, আমার মতে ২ লাখের কাছাকাছি যাবে। গবেষণার একটা উদ্দেশ্য হচ্ছে খরচ কমানো কিন্তু মান ভালো করা। খরচ বেশি মান ভালো এটা তো সবাই জানে। যেখানে ৬০ হাজার থেকে ১ লাখের মধ্যে এখনই এ ধরনের কিছু পাওয়া যায় সেখানে ১.৫ লাখ টাকায় যানবাহনে কেন চালকরা শিফট হবে। এক চালক পুরোনো মোটরসাইকেলের সামনের চাকার সেট কিনে লাগিয়েছে, ফলে হাইড্রলিক ব্রেক পেয়েছে আর সব মিলিয়ে খরচ ছিল ৫৫ হাজার। যদি দাম বর্তমানের চাইতে কম হয় তাহলে সহজেই এটাতে শিফট করবে। তখন চাইলে সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।

৭) খোলামেলা না বদ্ধ : আমার কাছে খোলামেলা শিক্ষাই ভালো লাগে। বদ্ধ থাকার জন্য তো সিএনজি অটোরিকশা আছে। রিকশার একটা আবেদন থাকতে হবে, এই যেমন বৃষ্টিতে হুড খোলা রিকশা আবেদন বা একটু লিলুয়া বাতাস খাওয়া। যে ডিজাইন তাতে সেটা আর আমি পাব না। রিকশা কিন্তু একটা হেরিট্যাজও।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

যারা অত্যাচার-নির্যাতন করেছে তাদের বিচার হতেই হবে : হুম্মাম কাদের

স্বাস্থ্য পরামর্শ / চোখের লাল-জ্বালা: এডেনোভাইরাল কনজাঙ্কটিভাইটিসের প্রাদুর্ভাব

ইতালিতে ‘ও লেভেল’ পরীক্ষায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অভাবনীয় সাফল্য

সাবেক এমপি বুলবুলের পিএস সিকদার লিটন গ্রেপ্তার

টাকা না পেয়ে ফুপুকে গলাকেটে হত্যা করল ভাতিজা

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে নারীদের জন্য বিশেষ কোটা বাতিল 

আন্তর্জাতিক ফেলোশিপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন ছাত্রদলের ঊর্মি

স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া

সাতক্ষীরার পুলিশ সুপারের মায়ের মৃত্যুতে প্রেস ক্লাবের শোক

প্রকৌশলীদের মর্যাদা রক্ষায় আইইবি’র ৫ দফা দাবি

১০

পুলিশের গাড়িতে হামলা চালিয়ে আসামি ছিনতাই

১১

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের লিগপর্বের ড্র অনুষ্ঠিত, রিয়াল-বার্সার প্রতিপক্ষ কারা?

১২

সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ভিডিওটি ভুয়া

১৩

আজীবন থাকা, কাজ ও ব্যবসার সুযোগ দেবে সৌদি, কত টাকা লাগবে

১৪

ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

১৫

এবার যুক্তরাজ্য থেকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের 

১৬

ফিফা কোয়ালিফায়ারে শেষবারের মতো নামছেন মেসি, জানালেন নিজেই

১৭

অপারেশন থিয়েটারে রোগীকে রেখে স্বাস্থ্যকর্মীর টিকটক, অতঃপর...

১৮

গকসু নির্বাচন : রেকর্ডসংখ্যক মনোনয়ন বিতরণ 

১৯

চট্টগ্রামে হবে আইইসিসি মাল্টিডেস্টিনেশন এডুকেশন এক্সপো 

২০
X