কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২৫, ০১:৪৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

এনটিআরসিএ কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর থেকেই দেশজুড়ে অসন্তোষ ও বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২৯ জুন) দুপুরে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কার্যালয়ের সামনে ফল বাতিল ও নতুন ফল প্রকাশের দাবিতে বিক্ষোভ করেন শত শত চাকরিপ্রার্থী। একপর্যায়ে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১২টার দিকে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়। বিক্ষোভকারীরা ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের চূড়ান্ত ফল বাতিল করে পুনরায় যাচাই-বাছাই এবং মৌখিক পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের সনদ প্রদানের দাবি জানান।

ফলাফলে অসংগতি ও বৈষম্যের অভিযোগ

গত ৪ জুন ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয়, যেখানে ৬০ হাজার ৫২১ প্রার্থীকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে ২৩ জুন সংশোধিত ফলে আরও ১১৩ জনকে উত্তীর্ণ দেখানো হয়। এনটিআরসিএ জানায়, ২০২৫ সালের ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ফল কারিগরি ত্রুটির কারণে প্রথমে অন্তর্ভুক্ত হয়নি এবং ফল পুনঃপরীক্ষা ও যাচাইয়ের পর সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হয়েছে।

তবে আন্দোলনকারী প্রার্থীরা এই ফলাফলে ব্যাপক অসংগতি ও বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছেন। তাদের দাবি, মৌখিক পরীক্ষায় ভালো ফল করার পরও অনেকে অনুত্তীর্ণ হয়েছেন। বিশেষ করে বোর্ডভিত্তিক ফলে ব্যাপক তারতম্যের অভিযোগ উঠেছে। কিছু বোর্ডে ৩০ জনের মধ্যে মাত্র ১ থেকে ৩ জন পাস করলেও, অন্য কিছু বোর্ডে ২৯ জনও পাস করেছেন। এ বিষয়টি ফলের স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।

ভুক্তভোগীদের ক্ষোভ ও অভিযোগ

ভুক্তভোগী প্রার্থীরা পরীক্ষকদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ এনেছেন। ফাতিমা বেগম নামে একজন প্রার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ভাইভায় সঠিক উত্তর দেওয়ার পরও আমাকে ফেল দেখানো হয়েছে। এটা ন্যায়সংগত নয়।’ একই ধরনের অভিযোগ করেছেন চাঁদপুরের প্রিয়াঙ্কা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাহমুদা বেগম। তারা সবাই ফল পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে প্রকৃত মেধাবীদের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

এর আগে আন্দোলনরত প্রার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা কার্যালয়ে বৈঠকে অংশ নেন। সেখানে এনটিআরসিএর প্রধান উপদেষ্টার সহকারী সচিব তাদের দাবি শোনেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি সমন্বয়ের আশ্বাস দেন। তবে আন্দোলনকারীরা এই আশ্বাসে সন্তুষ্ট নন এবং ফলাফল পুনর্বিবেচনা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনে প্রায় ১৯ লাখ প্রার্থী আবেদন করেছিলেন। লিখিত পরীক্ষায় ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন এবং মৌখিক পরীক্ষায় ৮১ হাজার ২০৯ জন অংশ নেন। চূড়ান্তভাবে মোট ৬০ হাজার ৬৩৪ জনকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্যপদের তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে এবং এই শূন্যপদগুলো পূরণে সফল প্রার্থীদের নিয়োগের সুপারিশ করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী হোস্টেলের দাবি ঢাবি শিবিরের 

ঢাকায় হচ্ছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়

এশিয়া কাপ মাতাতে চীনে যাচ্ছেন সুনামগঞ্জের ইমা

স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হত্যা মামলার আসামি বিএনপি নেতা

মুরাদনগরের ঘটনায় আ.লীগ নেতা জড়িত : রিজভী

জটিল রোগে ভুগছেন জোভান

সরকারের বিবৃতি / এনবিআরে আন্দোলনরতরা দ্রুত কাজে না ফিরলে কঠোর ব্যবস্থা

ঝুট ব্যবসা নিয়ে বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষে মামলা

বুড়িমারী স্থলবন্দর / আমদানি-রপ্তানি বন্ধ, ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ী-শ্রমিকরা

গোপনে প্রাণঘাতী মাদক মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণে, গাজায় ভয়াবহ অভিযোগ

১০

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতিসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক

১১

কাজান যাবে ‘মাস্তুল’

১২

নেতানিয়াহু ২০ বছর ধরে ক্ষমতায়, আর কত?

১৩

এনবিআরের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আজ বৈঠক হবে না : অর্থ উপদেষ্টা

১৪

পরিস্থিতি বিবেচনায় সাকিবকে নেয়নি রংপুর

১৫

গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড পেল ট্রান্সকম ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড

১৬

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের আসছে জোবাইক

১৭

গণরুম কালচার ভাঙতে ভিসি কার্যালয়ে ঢাবি ছাত্রশিবির

১৮

রিমান্ড শেষে সাবেক সিইসি হাবিবুল কারাগারে 

১৯

জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে : নাহিদ

২০
X