জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে কার্যত অচল হয়ে পড়ে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত আন্দোলন বন্ধে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এনবিআরকে অত্যাবশ্যকীয় সেবা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে এনবিআরের সংকট সমাধানে জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানকে প্রধান করে পাঁচ উপদেষ্টার সমন্বয়ে একটি কমিটিও গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়। এরই প্রেক্ষিতে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। কিন্তু একদিনের ব্যবধানে এনবিআরের সংকট সমাধানের বিষয়টি এই সংক্রান্ত জারি করা প্রজ্ঞাপন থেকে উধাও হয়ে গেছে। এতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে রাজি নন এনবিআর কর্মকর্তারা।
রোববার (২৯ জুন) মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্তসংক্রান্ত একটি কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিদ্যমান সংকট দ্রুত নিরসনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সমন্বয়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে। জনস্বার্থ রক্ষায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সব কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট ও শুল্ক স্টেশনগুলোর সব শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস ঘোষণার প্রস্তাব (মন্ত্রিসভায়) অনুমোদন করা হয়েছে। গতকালের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, এনবিআরের বিদ্যমান সংকট (সংস্কারকে কেন্দ্র করে আন্দোলন) দ্রুত সমাধানে ৫ উপদেষ্টার সমন্বয়ে কমিটি করা হল। যার আলোকে একটি সিদ্ধান্ত জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
তবে সোমবার (৩০ জুন) মন্ত্রী পরিষদের জারি করা প্রজ্ঞাপন আর গতকালের (রোববারের) উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের জারি হওয়া প্রজ্ঞাপনের কার্যপরিধির কোনো মিল নেই। এনবিআরের সংকট সমাধানে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হলেও গেজেট অনুযায়ী কমিটির কাজ ভিন্ন। কমিটি কাজ করবে ব্যবসা, বাণিজ্য, শিল্প, বন্দর ও রাজস্ব আদায় কার্যক্রম পর্যালোচনা-মূল্যায়ন এবং অধিকতর গতিশীল করার জন্য সুপারিশ করতে। অথচ উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটির কাজ হওয়ার কথা ছিল, এনবিআরের সংস্কার নিয়ে কেন বিরোধ তৈরি হলো, কেন এনবিআর আন্দোলনে গেল ও সংস্কার এগিয়ে নেয়ার উপায় বের করা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের একাধিক শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে প্রজ্ঞাপনের কার্যপরিধির কোনো মিল নেই। একটা পক্ষ এনবিআর কর্মকর্তাদের যৌক্তিক আন্দোলনকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করারও অভিযোগ করেন। তারা বলছেন, আমরাও রাষ্ট্রের স্বার্থে সংস্কার চাই এবং যৌক্তিক সংস্কার চাই। তারা সংস্কার বিরোধী না বলেও জানান তারা।
মন্তব্য করুন